পরিবেশ: চড় ুইয়ের সংখ্যা কমছে
আলী ফোরকান
চড় ুই পাখির সঙ্গে পরিচিত নন এমন মানুষের দেখা মেলা ভার। ছোট্ট আকৃতির এ পাখির বাস বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘরের ঘুলঘুলি অথবা গাছের কোটরে। একটু লক্ষ্য করলেই শোনা যায় এদের কিচিরমিচির আওয়াজ। দিন-ভর ছোট-ছোট পোকা-মাকড় বা ফড়িং ধরে ভক্ষণ করা এবং বাচ্চাকে তার ভাগ দেয়া চড় ুই পাখির কাজ। সবচেয়ে বড় কথা পরিবেশের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় খেয়ে এরা কৃষি কাজে খুবই উপকার করে। অন্যভাবে বলতে পরিবেশকে সুন্দর রাখে। কিন্তু দেশে দেশে জীব বৈচিত্র্য সম্ভার ধ্বংস হওয়ায় ধীরে ধীরে এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যা সংরক্ষণবাদী পরিবেশবিদদের রীতিমতো মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ব্রিটেনের দাতব্য সংস্থা রয়্যাল সোসাইটি ফর দ্য প্রটেকশন অব বার্ডস (আরএসপিবি) তেমনই একটি উদ্বেগজনক তথ্য জানিয়েছে। তারা ব্রিটেনের বিভিন্ন স্থানে সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এনিমেল কনসারভেশন নামক একটি জার্নালে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে- বাড়ির সামনের বাগান সংকুচিত হয়ে আসা এবং গাছপালা কেটে সাবাড় করায় পোকা-মাকড়ের সংখ্যা কমে গেছে। অথচ এসব পোকা-মাকড়ই চড় ুইয়ের খাদ্য। খাদ্য ও আবাসন সংকটের কারণেই গোটা ব্রিটেনে গত তিন বছর চড় ুইয়ের সংখ্যা কমেছে ৬৮ ভাগ। লন্ডন, ব্রিস্টল এবং এডিনবার্গ শহরে সংখ্যা হ্রাসের হার সবচেয়ে বেশি। আরএসপিবির অন্যতম বিজ্ঞানী ড. উইল পিস বলেন, সাধারণত প্রতি বছর একজোড়া চড় ুই অন্তত পাঁচটি বাচ্চা দিয়ে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য সংকটে বাসায় মরে থাকছে বহু চড় ুই। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই এদের সংখ্যা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ১৯৮০-এর দশকে ব্রিটেনে চড় ুইয়ের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত দশ বছরের ব্যবধানে কেবল লন্ডনেই চড় ুই পাখি কমে ৬০ ভাগ। ইউকে বায়োডাইভার্সিটি অ্যাকশন প্ল্যান সূত্রে বলা হয়েছে চড় ুই পাখির এই আকস্মিক সংখ্যা হ্রাসের বিষয়টি সনাক্ত করা হয়েছে। তাই এখন প্রয়োজন এদের রক্ষায় কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া। তা না হলে অচিরেই তা বিলুপ্তির মুখে পড়বে। তথ্য সুত্র বিবিসি ওয়েবসাইট
0 comments:
Post a Comment