মাদক বিক্রি চলে ফেরি করে
আলী ফোরকান
রাজধানীর পুরাতন ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ফেরি করে মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। এই সর্বনাশা মাদকে ঐ এলাকার প্রায় ঘরে ঘরে আসক্ত রয়েছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ও তার পিতা পর্যন্ত সর্বনাশা মাদকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায়নি। মাদক সেবনে মর্মান্তিকভাবে একই পরিবারে পিতা-পুত্র পর্যন্ত মারা গেছে। এক পরিসয়খ্যানে দেখা যায়, নাজিমউদ্দিন রোডে মাদকের স্পটে গিয়ে বিক্রি ও সেবন করার করুণ দৃশ্য দেখেছেন। এলাকার বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও দোকানদারসহ ২০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে আলাপকালে তারা নাজিমউদ্দিন রোডে মাদকের ভয়াবহতার ও বিগত কয়েক বছরে আসক্ত ২৩ জনের করুণ মৃত্যুর তথ্য জানান। ঐ এলাকার ছেলেমেয়েরা জানায়, মাদকের কারণে লেখাপড়া তাদের পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকেই লেখাপড়া বাদ দিয়ে মাদক বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়ছে এবং বেশ কয়েকজন স্কুল-কলেজ ছাত্র হেরোইনে আসক্ত হওয়ার কথা বলতে গিয়ে অভিভাবকরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এলাকাবাসীর প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চানখারপুল মোড় থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে চৌরাস্তায় পর্যন্ত নাজিমউদ্দিন রোডে ২৪ ঘণ্টা ইয়াবা,হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ মাদক বিক্রি হচ্ছে। এই রোডে দুই পাশের চানখারপুল, তাঁতখানা লেন, নবাববাগিচা, আলী নেকী দেউড়ি লেন (গফোবাড়ি), নিমতলীর ঢাল, হোসনী দালান ও জেলগেটের সামনের এলাকায় মাদক বেচাকেনা হচ্ছে। গলি পথে বেচাকেনার পাশাপাশি সেবন চলছে। অনেক বাসাবাড়ি মাদক সেবনে ভাড়ার জন্য দেয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চলে এই সকল বাসায় মাদক সেবন ও বেচাকেনা। স্কুল কলেজ ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ মাদক বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়ছে। স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা সর্বনাশা মাদকের ছোবলে লেখাপড়া বাদ দিয়ে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এলাকার কতিপয় গডফাদার এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। পুলিশ প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে নিয়মিত পাচ্ছে মোটা অংকের মাসোহারা। এ কারণে ঐ এলাকার গলিপথে মাদক বেচাকেনার হাট বসে। এলাকাবাসীকে দেখানোর উদ্দেশ্যে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা হয়। ঐ সময়েও মাদক বেচাকেনা চলে বলেও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। গত ৪ বছর সর্বনাশা মাদক সেবনে মৃত্যু বরণকারীদের মধ্যে রয়েছে দেলোরা মিয়া, মো. সিরাজ, মো. জাহাঙ্গীর, মো. রমজান, নাজার, নাজিম ও তার পিতা তারা মিয়া, টেনু, তোতা মিয়া, গিয়াসউদ্দিন, ফজল হক, দরবার মিয়া, এনা উল্লাহ, শাহজাহান, কালাসাব, মো. কামাল ও মো. দিলু। উক্ত এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনের ৬৩ ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকাবাসী এই সর্বনাশা মাদকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এতে প্রশাসনের টনক নড়েনি। এলাকার স্কুল-কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের উক্ত পরিবেশে লেখাপড়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কলেজসহ কয়েকটি স্কুল এলাকায় রয়েছে। তবে,পুলিশ বলছে তাদের প্রশাসনে কর্মকর্তাদের পরিবর্তন করায় কার্যক্রম কিছুটা মন্থর গতিতে চলছিল। বর্তমানে রাজধানী মাদক প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে তিনি জানান। আমরা আশাকরি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ আমাদের যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে বাচাতে আরো সহায়ক হবে।
0 comments:
Post a Comment