চীনে শিশু শিক্ষা কার্যক্রম
আলী ফোরকান
চীনে বাধ্যতামূলক শিক্ষা আইন রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী প্রত্যেককে কমপক্ষে নয় বছর স্কুলে পড়াশোনা করতেই হয়। চীনের শিক্ষা কার্যক্রমের প্রথম ধাপই হচ্ছে শিশু শিক্ষা। শিশু শিক্ষা কার্যক্রম হচ্ছে প্রাক-বিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থা। তিন থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুরাই মূলত এর আওতায় পড়ে। চীনের শিশু শিক্ষা কার্যক্রম চলে প্রধানত কিন্ডার গার্টেনে বা প্রাক-শিক্ষা কোর্সের মাধ্যমে। সরকারি প্রতিষ্ঠান, পৌর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় গ্রুপ ও পারিবারিক উদ্যোগে পরিচালিত প্রাক-বিদ্যালয় ব্যবস্থা পর্যাপ্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। এসব প্রাক-বিদ্যালয় বিভিন্ন সংস্থার অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। এভাবে প্রাক-বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, ইনস্টিটিউট ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমাজ কল্যানমূলক কার্যক্রমের পরিণত হয়েছে। এসব স্কুলের ছেলে-মেয়েদের খরচ নির্ভর করে স্কুলের অবস্থান কার্যক্রমের পরিধির ওপর।
কিন্ডার গার্টেন বা প্রাক-বিদ্যালয়ে সাধারণত তিন থেকে ছয় বছর বয়সের ছেলে-মেয়ে ভর্তি হতে পারে। কোন কোন কিন্ডার গার্টেনে আরো কম বয়সের ছেলে-মেয়েরাও ভর্তি হয়। বর্তমানে চীনে প্রায় দেড় লাখ কিন্ডার গার্টেন রয়েছে। ছয় বছর কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ৩০ ভাগ প্রাক স্কুল বা কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। বাকি ৭০ ভাগ শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই বয়স, আর্থিক অবস্থা ও সামাজিক অবস্থার কারণে অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা লাভ করে। চীনে সরকারি ও বেসরকারি দুই ধরনের কিন্ডার গার্টেন বা প্রাক-বিদ্যালয় রয়েছে। সরকারি কিন্ডার গার্টেনগুলোর অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলোতে অভিজ্ঞ শিক্ষক ও পর্যাপ্ত অবকাঠামো রয়েছে। তবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণসহ আরো শিক্ষক প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। বেসরকারিভাবে পরিচালিত কিন্ডার গার্টেনের পড়ানোর জন্য খরচ বেশি পড়ে। তবে এগুলোর বৈশিষ্ট আলাদা। এগুলো সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার বিষয়বস্তু ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনে। এ কারণে বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনের সংখ্যাও। বর্তমানে বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনের সংখ্যা মোট কিন্ডার গার্টেনের প্রায় ৩০ ভাগ।
চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিশু কার্যক্রমের জন্য বিভিন্ন বয়সের শিশুদের বেড়ে ওঠার সামর্থ্য ও মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট অনুসারে কর্মসূচি প্রণয়ন করে থাকে। শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কিন্ডার গার্টেনগুলোর মূলত শিশুদের অনুভূতি প্রকাশ, ভাষা, সংখ্যা, আচরণ ইত্যাদি বিষয় শিখিয়ে থাকে।
0 comments:
Post a Comment