Saturday, June 11, 2016

চিনির চাহিদা পূরণে বিকল্প উৎস

চিনির চাহিদা পূরণে বিকল্প উৎস
আলী ফোরকান
বাংলাদেশের মোট আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ১২,৪৩,৬৫,০০০। বর্তমানে অনুমিত জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য দেশে উৎপাদিত পণ্যের বাইরে বিদেশ থেকে প্রচুর দ্রব্য আমদানি করতে হয়। এ সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মধ্যে চিনি অন্যতম। বর্তমানে দেশে মোট চিনির চাহিদা ১২-১৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদিত চিনির পরিমাণ ১,৫০,০৩৫ মেট্রিক টন (২০১৪-২০১৫)। দেশের ১৫টি চিনিকলের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২,১০,৪৪০ মেট্রিক টন। এগুলোর পুনক্ষর্মতা কাজে লাগাতে পারলেও দেশে চিনি চাহিদার ঘাটতি থাকবে ১০-১২ লাখ মেট্রিক টন। আমাদের দেশে চিনি শিল্পের একমাত্র কাঁচামাল হচ্ছে আখ। দেশে জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আবাসন, শহরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে যে হারে ফসলি জমি কমছে তাতে ইক্ষু আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। উপরন্তু আর্থিকভাবে বেশি লাভজনক কিছু ফসল যেমন- আম, লিচু, কুল, কলা, ভুট্টা (এমনকি বর্তমানে ধান), এগুলোর আবাদ প্রসারের ফলে ইক্ষুসহ কিছু ফসলের আবাদি জমির পরিমাণ কমে আসছে। তবে উচ্চ ফলনশীল ইক্ষু চাষ বৃদ্ধি, চিনিকলের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কৃষকের জন্য ইক্ষু চাষ অধিকতর লাভজনক করতে পারলে চিনি উৎপাদন হয়ত আরও কিছু পরিমাণ বৃদ্ধি করা যাবে। তবে দেশের চিনির চাহিদা পূরণে বিশাল ঘাটতি থেকেই যাবে। উল্লিখিত অবস্থায় জাতীয় স্বার্থে দেশে চিনির ঘাটতি পূরণে বিকল্প পন্থা উদ্ভাবন অত্যাবশ্যক।
আবহমান বাংলার অতি পরিচিত খেজুর ও তালগাছ দেশীয় গুড় ও চিনি উৎপাদনের অন্যতম উৎস হিসেবে প্রচলিত। খেজুরের গুড় অত্যন্ত উপাদেয় এবং গ্রামবাংলার মানুষ সাধারণত শীতকালে নানা প্রকার সুস্বাদু পিঠা, ক্ষির, পায়েস ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করে। তালের রস হতে গুড় উৎপাদন দেশের সব এলাকায় প্রচলিত নয় তবে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চলে তালের রস হতে দেশীয় পদ্ধতিতে পাটালি গুড়, তাল মিছরি ইত্যাদি তৈরি করা হয়। খেজুর ও তাল রস হতে গুড় ও চিনি তৈরি বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক প্রচলিত না থাকলেও খেজুর ও তাল গাছের আবাদ বৃদ্ধি করে বাণিজ্যিকভাবে এগুলো হতে গুড় ও চিনি উৎপাদন করে দেশের বিদ্যমান চিনি ঘাটতি মেটানো সম্ভব। এমনকি বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব। উল্লেখ্য দেশে ও বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে যা খেজুর ও তাল হতে দেশীয় পদ্ধতিতেই উৎপাদন সম্ভব। আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতি সহজেই চিনিতে পরিণত করা সম্ভব।
বর্তমানে দেশে খেজুরের রস হতেই গুড় তৈরি করা হয় বেশি- তালের রস হতে গুড় উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম। তবে সঠিক পরিসংখ্যানের অভাবে উৎপাদিত গুড় ও চিনির পরিমাণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। এক হিসাব মতে বৃহত্তর যশোর ও ফরিদপুর, খুলনা ও রাজশাহী জেলায় এক কোটিরও বেশি তাল ও খেজুর গাছ রয়েছে। তবে বিদ্যমান এ বিপুল সংখ্যক খেজুর গাছ এবং তাল গাছের বেশির ভাগ গাছ হতে রস আহরণ করা হয় না। খুব লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও কেন এত কম সংখ্যক গাছ হতে রস আহরণ করা হয় অনুসন্ধানে নিম্নোক্ত কারণসমূহ জানা যায়:
১. খেজুর/তাল গাছ হতে রস আহরণের দক্ষতাসম্পন্ন কারিগর/শ্রমিকের অভাব;
২. রস হতে গুড়/চিনি উৎপাদনের জন্য যে জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন তার অভাব অথবা তাতে খরচ বেশি;
৩. বাণিজ্যিকভাবে রস বিক্রির কোন ব্যবস্থা না থাকা।
একথা সত্য, যে সমস্ত পরিবারের ১-৫টি গাছ রয়েছে তারা উৎপাদন কম হবে বিধায় লাভজনক না হওয়ায় নিজেরা গুড় ও চিনি উৎপাদনে একেবারেই উৎসাহিত হয় না। তদপেক্ষা বেশি গাছের মালিকগণ সাধারণত গুড় ও চিনি উৎপাদনে উৎসাহী হয়। কিন্তু উপর্যুক্ত কারণে অনেকে উৎপাদনের ঝক্কি- ঝামেলায় যেতে চান না। এ অবস্থায়, উল্লেখিত কারণগুলোর জন্য খেজুর ও তাল গাছ হতে গুড় ও চিনি উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণ না হওয়ায় তা জাতীয় পর্যায়ে হিসেবে আসছে না। যদিও এ দু’টো উৎস হতে গুড় ও চিনি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে দেশের চিনির চাহিদা আরও অনেক বেড়ে যাবে। এ অবস্থায়, তাল ও খেজুর রস এবং তা হতে গুড় উৎপাদনে সরকারিভাবে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা প্রদান জরুরি। এতে কোন কোন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিজেদের প্রশিক্ষিত জনশক্তি ব্যবহার করে হয়ত তাল, খেজুর গাছের মালিকগণের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় (উৎপাদিত গুড় ও চিনির ভাগ বা মূল্যের বিনিময়ে) রস আহরণ করবেন এবং উন্নত পদ্ধতিতে গুড় ও চিনি (সাদা ও লাল) উৎপাদন করে দেশে বিদেশে প্রচারপূর্বক বাজারজাত করবেন। খেজুর ও তালগাছের মালিকগণও এতে উৎসাহিত হবেন এবং ভবিষ্যতে তারা এ জাতের গাছ রোপণ করে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন।
একটি পূর্ণবয়স্ক তালগাছ হতে দৈনিক ১০ কেজি রস হিসেবে ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস মেয়াদে ১২০ দিনের মৌসুমে মোট আহরিত রস ১২০০ কেজি। ১০% চিনি হিসেবে প্রতি গাছ হতে চিনি পাওয়া যাবে ১২০ কেজি। ৫% হিসেবে প্রতি গাছ হতে ঝোলা গুড় পাওয়া যাবে ৬০ কেজি। একটি খেজুর গাছ হতে মাসে ৪০ কেজি রস হিসেবে অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস মেয়াদে ১২০ দিনের মৌসুমে মোট আহরিত রস ১৬০ কেজি। ১০% চিনি হিসেবে প্রতি গাছ হতে চিনি পাওয়া যাবে ১৬ কেজি। ৫% হিসেবে প্রতি গাছ হতে ঝোলা গুড় পাওয়া যাবে ৮ কেজি। এ হিসেব বেশি মনে হলে ধরে নেয়া যাক প্রতি খেজুর বা তাল গাছ হতে বছরে এক মৌসুমে গড়ে ৪০ কেজি গুড়/চিনি উৎপাদন করা যাবে। এতে ১২ লাখ টন গুড় ও চিনি উৎপাদন করতে মোট গাছ প্রয়োজন হবে প্রায় তিন কোটি।
খেজুর ও তালগাছের আবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। খেজুর ও তালগাছের আবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকারি মালিকানায় যে সমস্ত জমি আছে যেমন- খাস জমি, সরকারি রাস্তা, রেলপথ, বাঁধ, উপকূলীয় অঞ্চল ইত্যাদিতে সরকারি উদ্যোগে খেজুর ও তালগাছ রোপণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি এতে সাধারণ জনগণও তাদের জমিতে খেজুর ও তালগাছ রোপণ করতে উৎসাহী হবে। এক হিসেবে দেখা যায় যে সারা দেশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২০,০০০ কি.মি., স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩০,০০০ কি.মি. এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩,০০০ কি.মি. মোট ৫৩,০০০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। দু’পাশের জমি ধরা হলে ৫৩,০০০ক২=১,০৬,০০০ কিলোমিটার রাস্তা গাছ রোপণ উপযোগী হয়। প্রতি ২.৫ মিটার পর পর ১টি গাছ রোপণ করা হলে রোপণযোগ্য মোট গাছের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ কোটি ২৪ লাখ। এ অবস্থায় দেখা যায়, কেবলমাত্র সরকারি রাস্তায় এ গাছ রোপণ ও বড় করতে পারলে দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি সংখ্যক গাছ ও গুড় চিনি উৎপাদন সম্ভব। এ তো গেল সরকারি রাস্তায় গাছ রোপণের সম্ভাবনা। যদি সাধারণ জনগণ উৎসাহী হয়ে উঠে তবে কোটি কোটি গাছ দেশে রোপিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশে ৭২৪ কিলোমিটার উপকূল রয়েছে। উপকূল ধরে বিস্তৃত  অঞ্চলে তাল খেজুর গাছের বাগান করা যায়। এতেও ২০-৩০ কোটি খেজুর/তালগাছ রোপণ সম্ভব। এতে দেশের উপকূল অঞ্চলে ঝড়, সাইক্লোন, সিডর, আইলা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করাও সম্ভব হবে। পাশাপাশি দেশের চিনির চাহিদা মিটানোর পরও বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। তাছাড়া তাল/খেজুর গাছের পাতা দ্বারা গ্রামীণ জ্বালানির চাহিদা মিটানো সম্ভব। তাল খেজুর গাছের পাতা দ্বারা মাদুর, কার্পেট, সৌখিন তৈজসপত্র ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব। এতে কুটির শিল্পের প্রসার ঘটবে ও বেকারত্ব দূর হবে। ফল হিসেবেও তালের জনপ্রিয়তা ব্যাপক। এতদ্ব্যতিত তাল খেজুর গাছের কাঠ খুবই শক্ত ও টেকসই। এগুলো ঘর তৈরিতে ব্যবহৃত হবে। এতে বনজ সম্পদের উপর চাপ হ্রাস পাবে।
তাল খেজুর গাছের রস হতে চিনি ও গুড় উৎপাদন বাণিজ্যিকীকরণ করতে হলে কিছু কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন। বেসরকারি পর্যায়ে খেজুর ও তালগাছের আবাদ বৃদ্ধি করতে হলে খেজুর ও তালগাছ হতে রস আহরণ ও রস হতে গুড় ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রমকে বাণিজ্যিক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিতকরণ জরুরি। বিদ্যমান খেজুর/তাল গাছের রস প্রক্রিয়াজাতকরণ করে গুড় ও চিনি উৎপাদনের জন্য ক্ষুদ্র আকারের কারখানা স্থাপন করা যায়। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক হতে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করলে বেসরকারি উদ্যোক্তাগণ উৎসাহিত হবে। পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে উৎপাদিত চিনি, গুড় সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধে প্রদান করতে হবে। একবার পুরো কার্যক্রমে জনগণ সম্পৃক্ত হয়ে গেলে সরকারি সহায়তার আর প্রয়োজন পড়বে না।
রাজশাহী বিভাগের বিভাগের ১৬টি জেলার জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন¦য়ে রাস্তার উভয় পার্শ্বে খেজুর/তাল বৃক্ষ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ২০০৮ সালের জুন মাসে একটি প্রকল্প কাজ শুরু করে। এতে সরকারি অর্থায়ন ছাড়াই অতি সামান্য খরচে রাজশাহী বিভাগের প্রতি জেলায় নির্বাচিত রাস্তাগুলোর উভয় পার্শ্বে তাল এবং খেজুর বীজ রোপণ করা হয়। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বীজ সবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে বীজ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন না করায় বীজ অঙ্কুরোদগমের হার দাঁড়ায় অনুমান শতকরা ৩০%। বর্তমানে রাস্তার পাশে এ গাছগুলো বেড়ে উঠছে দেখা যাচ্ছে। এ সমস্ত গাছ টিকে থাকলে আগামী ১০ বছর পর এগুলো থেকে চিনি/গুড় উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সুখের বিষয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইতোপূর্বে মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনায় অনেক তাল খেজুর গাছ রোপণ করা হয়েছিল। এগুলো বর্তমানে বিভিন্ন রাস্তার পার্শ্বে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে দেখা যায়।
খেজুর ও তালগাছ পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষ এবং এদেশের পরিবেশের সঙ্গে অন্য যে কোন বৃক্ষের চেয়ে সর্বাধিক অভিযোজনশীল। বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, সাইক্লোন, সিডর এমনকি তৃণভোজী প্রাণীর আগ্রাসন ইত্যাদি সকল প্রতিকূল অবস্থায়ই এ দু’টো প্রজাতির বৃক্ষ টিকে থাকে। এছাড়া, একবার রোপিত হলে এগুলো অনেকটা অনাদর, অবহেলা ও অযতেœ বেড়ে উঠে। প্রাকৃতিক শত্রু নেই বললেই চলে। এ দু’টো গাছ দীর্ঘজীবী, ৮০ বছরেরও বেশিদিন বেঁচে থাকে। উপরন্ত এ দু’টো গাছ অতি অল্প জমিতে ফলানো যায়- জমির আল বা রাস্তার পার্শ্বে লাগালে ছায়া ফেলে পাশের জমির কোন ক্ষতি করে না। দশ বছর বয়সেই গাছ হতে রস আহরণ করা যায়।
তাল ও খেজুর গাছ রোপণ কর্মসূচি এবং তাল খেজুর রস হতে গুড় চিনি উৎপাদন কার্যক্রমকে কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পে রূপে দাঁড় করাতে পারলে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এ কর্মসূচির সঠিক বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে চিনিশিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সহায়তা করবে। এমনকি সমগ্র দেশব্যাপী এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চিনি দেশের বাইরে রপ্তানি করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখা সম্ভব হবে। দেশের পরিবেশের উন্নয়নেও এ কর্মসূচি অনন্যসাধারণ অবদান রাখবে।
পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে এ প্রয়াসকে রূপ দিতে পারলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে এবং যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হলে কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন অতি সহজ। প্রয়োজন সদিচ্ছার। সঠিক বীজ ও চারার যোগান সরকারিভাবে প্রদান করা হলে এবং এগুলো রোপণ ও সংরক্ষণ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সরকারি সংস্থা ও সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারলে কয়েক কোটি তাল ও খেজুর বৃক্ষের সমাহার ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চিনির টেকসই উৎস হিসেবে এক দীর্ঘস্থায়ী বিশাল সম্পদে পরিণত হবে। চিনির ঘাটতি কোনদিনও বাংলাদেশে হবে না। এতে সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতি, ঘুচবে বেকারত্ব, উন্নয়ন হবে পরিবেশের এবং সর্বোপরি চিনিতে স্বয়ম্ভর হবে বাংলাদেশ।


0 comments:

Post a Comment