Monday, April 25, 2016

রবীন্দ্র নাথের ‘তোতাকাহিনী’র অনুবাদ ও একটি সমীক্ষা

রবীন্দ্র নাথের ‘তোতাকাহিনী’র অনুবাদ ও একটি সমীক্ষা
আলী ফোরকান 
‘তোতাকাহিনী’ ‘সবুজ পত্র’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় মাঘ ১৩২৪ সংখ্যায়। শিক্ষা সংস্কারের জন্য বিপুল আয়োজন চলছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথের মনে হয়েছে উপলক্ষ্যের আয়োজনে মূল লক্ষ্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই লক্ষ্যকেই সামনে রেখে কবি তোতাকাহিনীর ইংরেজি অনুবাদ করলেন ‘ঞযব চধৎৎড়ঃ’ং ঞৎধরহরহম। সে অনুবাদ প্রকাশিত হল ‘ঞযব গড়ফবৎহ জবারব’িপত্রিকায় ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে। কিন্তু কবির প্রতিবাদের আয়োজন এখানেই শেষ হল না। নন্দলালের আঁকা প্রচ্ছদচিত্র ও গল্পের উদ্দেশ্যকে আরও তীব্র করে প্রকাশের জন্য অবনীন্দ্রনাথের আটটি ব্যঙ্গচিত্রসহ যে রচনা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হল-
ঞযব চধৎৎড়ঃ’ং ঃৎধরহরহম/ইু জধনরহধফৎধহধঃয ঞধমড়ৎব (ঞৎধহংষধঃবফ নু ঃযব অঁঃযড়ৎ ভৎড়স ঃযব ঙৎরমরহধষ ইবহমধষর)./ রিঃয ঊরমযঃ উৎধরিহমং নু অনধহরহফৎধহধঃয ঞধমড়ৎব/অহফ ধ ঈড়াবৎ উবংরমহ নু/ ঘধহফধষধষ ইড়ংব/ ঈধষপঁঃঃধ ধহফ ঝরসষধ/ ঞযধপশবৎ, ঝঢ়রহশ ্ ঈড়./১৯১৮
টাইটেল পেজের আগে মুখপাত্রে একটি ছবি সুন্দর এবং ভয়াবহ। একটি ডানামেলা উড়ন্ত পাখিকে দীর্ণ করে কালো রঙের কলম। ডানার রঙ বিবর্ণ। এর পরের পৃষ্ঠায় উৎসর্গ-‘চধৎঃরপশ এবফফব’ কে।
এই গ্রন্থের প্রথম ছবি ‘ঞযব চঁহফরঃ’ জ্ঞানের ভারে ন্যুব্জ দেহ, মাথায় টিকি দৃশ্যমান। চোখে চশমা। পায়ে খড়ম। সমস্ত মাথাটাই কালো। সামান্য সাদা অংশে টাক বিদ্যমান। তার সামনে একটি গাছের শাখায় একটি পাখি। গাছে একটি ফলও ধরেছে।
গল্পের প্রথম পৃষ্ঠায় প-িতদের তলব পড়েছে-ঞযব চঁহফরঃং বিৎব ংঁসসড়হমবফ... ধপপড়ৎফরহম ঃড় ঃযব চঁহফরঃং, ঃযব ভরৎংঃ ঃযরহম হবপবংংধৎু ভড়ৎ ঃযরং নরৎফ’ং বফঁপধঃরড়হ ধিং ধ ংঁরঃধনষব পধমব.
এরপর গল্পের তৃতীয় ও চতুর্থ পৃষ্ঠায় আছে-অ মড়ষফবহ পধমব ধিং নঁরষঃ রিঃয মড়ৎমবড়ঁং ফবপড়ৎধঃরড়হ..... ছবির নাম-ঞযব ঈধমবফ। সমস্ত পৃষ্ঠায় সাদা জুড়ে শুধু চারটি লম্বা লাইন- উপরের একটি রঙ পা-বদ্ধ পাখি। রঙের শেষ প্রান্তে ঝুলছে পুঁথি আর কলম। এই গল্পের প্রথম পৃষ্ঠা শেষ হয়েছিল-ঞযব চঁহফরঃং যধফ ঃযবরৎ ৎবধিৎফ ধহফ বিহঃ যড়সব যধঢ়ঢ়ু. এরপরের পৃষ্ঠা শেষ হল-ঞযব মড়ষফংসরঃয ভরষষবফ যরং নধম রিঃয সড়হবু ধহফ ষড়ংঃ হড় ঃরসব রহ ংধরষরহম যড়সবধিৎফং.
এই গ্রন্থের পঞ্চম ও ষষ্ঠ পৃষ্ঠায় প্রথমেই পুঁতির ছবি- সেখানে লেখা আছে- ‘হ য জ ব ব র ল’। যদিও শুরু হয়েছে শুধু ‘হ য ব র ল’ দিয়ে। এ ছবির নাম ‘ঞযব ঝপৎরনব। ষষ্ঠ পৃষ্ঠায় গল্প শুরু হয়েছে-ঞযব চঁহফরঃং ংধঃ ফড়হি ঃড় বফঁপধঃব ঃযব নরৎফ রিঃয ঢ়ৎড়ঢ়বৎ ফবষরনবৎধঃরড়হ যব ঃড়ড়শ যরং ঢ়রহপয ড়ভ ংহঁভভ, ধং যব  ংধরফ : “ঞবীঃ নড়ড়শং পধহ হবাবৎ নব ঃড়ড় সধহু ভড়ৎ ড়ঁৎ ঢ়ঁৎঢ়ড়ংব.”
এখানেও পৃষ্ঠা শেষে যারা সমস্ত আয়োজন গড়ে তুলছে তাদের সিদ্ধির কথা আছে-গবহ বিৎব বসঢ়ষড়ুবফ রহ ষধৎমব হঁসনবৎং, ধহফ ংঁঢ়বৎারংড়ৎং বিৎব ংঃরষষ সড়ৎব হঁসবৎড়ঁং. ঞযবংব, রিঃয ঃযবরৎ পড়ঁংরহং ড়ভ ধষষ ফরভভবৎবহঃ ফবমৎববং ড়ভ ফরংঃধহপব, নঁরষঃ ধ ঢ়ধষধপব ভড়ৎ ঃযবসংবষাবং ধহফ ষরাবফ ঃযবৎব যধঢ়ঢ়রষু বাবৎ ধভঃবৎ.
নিন্দুকের অভাব নেই। তারাই রটাল খাঁচার শ্রীবৃদ্ধি ঘটলেও পাখির নয়। রাজা শুনে ভাগ্নেকে ডাকলেন। ভাগ্নে পন্ডিত, পুঁথিকার, প্রহরীদের জিজ্ঞাসা করতে বললেন। উত্তর এল-ঋড়ড়ফ রং ংপধৎপব রিঃয ঃযব ভধঁষঃ-ভরহফবৎং, ধহফং ঃযধঃ রং যিু ঃযবরৎ ঃড়হমঁবং যধাব মধরহবফ রহ ংযধৎঢ়হবংং.’।
কিন্তু এ পৃষ্ঠা শেষ হল সেই পারিতোষিকে-ঞযব বীঢ়ষধহধঃরড়হ ধিং ংড় ষঁসরহড়ঁংষু ংধঃরংভধপঃড়ৎু ঃযধঃ ঃযব টধলধ ফবপড়ৎধঃবফ বধপয ড়হব ড়ভ যরং হবঢ়যবি রিঃয যরং ড়হি ৎধৎব লববিষং.
পরের পৃষ্ঠায় ভাগ্নের ব্যঙ্গ ছবি-সাজসজ্জা অলংকার এবং সুউচ্চ ভুঁড়িসমেত। ছবির নাম-ঞযব জধলধ’ং ঘবঢ়যব।ি যারাই শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সকলেরই শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে ক্রমশই। শুধু শিক্ষা সমারোহে দীর্ণ হচ্ছে পাখির স্বাভাবিক অস্তিত্ব।
বাংলা “তোতাকাহিনীতে যে সাতটি পর্ব আছে সেখানেও বার বার ফিরে এসেছে পুরস্কারের কথা-
রাজপন্ডিতেরা খুশি হইয়া বাসায় ফিরিলেন (পর্ব ২) তারা এবং তাদের মামাতো খুড়তোতা মাসতুতো ভাইরা খুশি হইয়া কোঠা- বালাখানায় গদি পাতিয়া বসিল (পর্ব ৩) আর তখনি ভাগিনার গলায় সোনার হার চড়িল (পর্ব ৪) কামারের পসার বাড়িয়া কামারগিন্নির গায়ে সোনাদানা চড়িল এবং কোতোয়ালের হুশিয়ারি দেখিয়া রাজা তাকে শিরোপা দিলেন। (পর্ব ৬)
ইংরেজি অনুবাদে ‘ঞযব ঋধঁষঃ-ঋরহফবৎ’-এর যে ছবিটি আছে, সেটাই পরিপূর্ণ এবং সুন্দর। মনে হয় একমাত্র সেই ‘ব্যঙ্গহীন’।
এই অনুবাদের নয় দশ পৃষ্ঠায় ছবির নাম ‘ঞযব ওৎড়হ ঈযধরৎ’। দীর্ঘ শিকলে বদ্ধ পাখি। দূর প্রান্তে জানলার ফাঁক দিয়ে প্রকৃতি- সেখানে দুটি উড়ন্ত পাখির আভাস।
ঞযব নরৎফ ঃযঁং পৎধষিবফ ড়হ, ফঁষু ধহফ ঢ়ৎড়ঢ়বৎষু, ঃড় ঃযব ংধভবংঃ াবৎমব ড়ভ রহধহরঃু. ওহ ভধপঃ রঃং ঢ়ৎড়মৎবংং ধিং ংধঃরংভধপঃড়ৎু  রহ ঃবয বীঃৎবসব.। কিন্তু তবু সকালের আলো এলে পাখির খাঁচায় এসে পড়ে। সে কাতরভাবে পাখা ঝাপটিয়ে ওঠে। তার প্রতিকার হল। রাজার শিক্ষাদপ্তরের সিদ্ধান্ত। ঞযব রৎড়হ পযধরহ ধিং ংড়ড়হ পড়সঢ়ষবঃবফ, ধহফ ঃযব নরৎফ’ং রিহমং বিৎব পষরঢ়ঢ়বফ.
একাবরে শেষে প্রথমে রাজার ছবি আর পরের পৃষ্ঠা শুরু-ঞযব নৎরভফ ফরবফ এই বাক্য দিয়ে। রাজার আপাদমস্তক সাজসজ্জা- মনে হতে পারে তাসের দেশের রাজার আদিরূপ এখানেই খুঁজে পায়া যাবে। এ ছবির নাম : ঞযব জধলধ।
পাখির শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। রাজা প্রশ্ন করলেন- পাখি লাফায় কিনা, ওড়ে কিনা-? ভাগ্নে জানাল- না।
পাখি আনা হল রাজার কাছে-রাজা পাখিকে পরীক্ষা করলেন- সেই ছবিই দেওয়া আছে বইতে। ‘ঞযব জধলধ ঢ়ড়শবফ রঃং নড়ফু রিঃয যরং ভরহমবৎ, ড়হষু রঃং রহহবৎ ংঃঁভভরহম ড়ভ নড়ড়শ-ষবধাবং ৎঁংঃষবফ.’
এই যে গ্রন্থভুক্ত পাখিকেই সম্পূর্ণ শিক্ষিত বলে মনে করলেন রাজা তা আরও তীব্রতর হল প্রকৃতি আর জীবনের প্রকাশের শেষ সংবাদে। গল্প শেষে প্রথম পঙক্তি ছিল ঃ ‘ঞযব নরৎফ ফরবফ’। আর গল্প শেষ হল- ‘ঙঁঃংরফব ঃযব রিহফড়,ি ঃযব সঁৎসঁৎ ড়ভ ঃযব ংঢ়ৎরহম নৎববুব ধসড়হমংঃ ঃযব হবষিু নঁফফবফ ধংড়শধ ষবধাবং সধফব ঃযব অঢ়ৎরষ সড়ৎহরহম রিংঃভঁষ.’।
প্রচ্ছদে রয়েছে নন্দলাল বসুর ছবি। একটা গোলাকার বৃত্তের মধ্যে লেখা বই এবং লেখকের নাম। তারপর পত্রময় শাখায় বসে একটি পাখি। কিন্তু এই বৃত্তের বাইরে রাজার বিপুল শিক্ষার সাড়ম্বর আয়োজন। বস্তুত ব্যঙ্গছবিসহ এই গ্রন্থ দেখলে একথা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে এর নেপথ্যে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে। কবি নিজ ব্যয়ে বইটি ছাপিয়ে বিভিন্ন মান্য ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সে তালিকায় আছেন- রোটেনস্টাইন, আর্নেস্ট রীজ, ইয়েটস, স্টার্জ ম্যুর। আগ্রহ ভরে মতামতও চাইছেন কবি।
অনুবাদ বইটি বিভিন্ন মান্যজনের কাছে পাঠানো হয়েছিল্ তাঁরা কবিকে তাঁদের প্রক্রিয়াও জানিয়েছেন। পাট্রিক গেডেস কবিকে জানিয়েছেন-‘অফসরৎধনষব! ঞযব চধৎৎড়ঃ রং নবরহম ধাবহমবফ....ওঃ ড়িঁষফ যধাব ঢ়ষবধংবফ ুড়ঁ- ঃযব ফবষরমযঃ রিঃয যিরপয সু ভৎরবহফ ঈ.ঊ. উড়নংড়হ যবৎব, জবপঃড়ৎ ড়ভ ঃযব নরম ঐরঃপয ঝপযড়ড়ষ.... ঈধৎৎরবফ ড়ভভ ঃযরং ্ মষড়ধঃবফ ড়াবৎ রঃ; ্ ংযড়বিফ রঃ ঃড় ঃযব াবৎু ঢ়বড়ঢ়ষব রঃ রং সবধহঃ ঃড় শরষষ (ড়ৎ পঁৎব?), ও ধস ংঁৎব রঃ রিষষ যবষঢ় ঃযব পধঁংব বাবৎুযিবৎব.’।
রবীন্দ্রনাথের পাঠো কপির আগেই স্যাডলার ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকা থেকে অনুবাদটি পড়ে সম্পাদককে ‘বহঃযঁংরধংঃরপ ধঢ়ঢ়ৎবপরধঃরড়হ’ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথকে গেডেস লেখেন-‘ঝড়সবঃরসব ধমড় যব ংঢ়বহঃ ধ হরমযঃ যবৎব রহ ড়ঁৎ ংপযড়ড়ষ যিবহ ও যধফ ধহ ড়ঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃু ড়ভ ষড়হম পড়হাবৎংধঃরড়হং রিঃয যরস. ও ধিং ফবষরমযঃবফ ঃড় ভরহফ ঃযধঃ রহ ধষষ ারঃধষ ঃযরহমং ধনড়ঁঃ বফঁপধঃরড়হ বি ধমৎববফ. ইঁঃ ও ধস ধভৎধরফ ঃযব পড়সসরংংরড়হ রং পড়সঢ়ড়ংবফ ড়ভ সবসনবৎং সড়ংঃ ড়ভ যিড়স ফরভভবৎ রহ ঃযবরৎ ারবংি ভৎড়স উৎ. ঝধফষবৎ ধহফ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব বি ধষৎবধফু বীঢ়ৎবংংরহম ঃযবরৎ ফড়ঁনঃ ধনড়ঁঃ ঃযব ৎবংঁষঃ.’
শিক্ষা কমিশন সাক্ষ্য দেবার জন্য কবিকে অনুরোধ করলে তিনি অসম্মত হন। তাঁর যুক্তি ছিল আগেই তিনি স্যাডলারকে তাঁর মতামত জানিয়েছেন। স্যাডলার আলোচনার যে সারসংক্ষেপ কবিকে পাঠিয়েছিলেন তিনি তা অনুমোদন করে পাঠান। কিন্তু এই সূত্রে জানিয়েছিলেন যে বরাবরই কবি তাঁর ছাত্রদের ইংরেজি শিক্ষার জন্য ইংরেজদেরই নিয়োগ করেছেন কিন্তু সেটা তাদের বিশেষ দক্ষতা ও যোগ্যতার জন্য ততটা নয়। কবি তা কোনো সাধারণ বিদ্যালয় গড়ে তুলতে চাননি- চেয়েছিলেন একটি আর্ন্তজাতিক পরিবেশ তৈরি করতে। তাই ইংরেজ শিক্ষকদের তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁর বিদ্যায়তনে। তাঁরা অনেকেই যোগ্য কিন্তু ছাত্রদের প্রতি ততটা সহানুভূতিশীল নয়। কিন্তু তার ফলে বিপরীত অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিশেষত বাঙালি ছাত্ররা বিরূপ মনোভাব পোষণ করত বিদেশীদের প্রতি।
কবি লিখেছেন-ইবরহম হধঃঁৎধষষু ংবহংরঃরাব ঃযব সরহফং ড়ভ ইবহমধষর নড়ুং ধৎব ংঁৎব ঃড় নব ঢ়ড়রংড়হবফ নু ঃযরং ভববষরহম ড়ভ যধঃৎবফ ধমধরহংঃ ঃযব বিংঃবৎহ ঢ়বড়ঢ়ষব, রভ ঢ়ষধপবফ ঁহফবৎ ভড়ৎবরমহ ঃবধপযবৎং যিড় ফড় হড়ঃ ষড়াব ঃযবস ধহফ ঃযবৎবভড়ৎব ফড় হড়ঃ পধৎব ঃড় ঁহফবৎংঃধহফ ঃযবস. ঞযব নড়হফং ড়ভ যঁসধহ ৎবষধঃরড়হংযরঢ় ড়ভ ষড়াব ধহফ ংুসঢ়ধঃযু ধৎব সড়ৎব হববফবফ ভড়ৎ ড়ঁৎ ংঃঁফবহঃং ভৎড়স ঃযবরৎ বিংঃবৎহ ঃবধপযবৎং ঃযধহ ধ সবৎব ড়ভভরপরধষ ফঁঃরভঁষহবংং ধহফ বভভরপরবহপু.’।
যে সময় এই গল্পের অনুবাদ করছেন কবি, বিশ্বভারতী ভাবনা সেই একই সময়ে। আমাদের মনে পড়তে পারে শান্তিনিকেতন পত্রিকায় জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬-এ প্রকাশিত কবির ‘অসন্তোষের কারণ’। সেখানে তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যে আমাদের শিক্ষাকে আমাদের বাহন করলাম না, আমরা শিক্ষাকে শুধু বহন করে গেলাম। বললেন,‘অনেককার এমনি করিয়া কাটিল, আর সময় নষ্ট করা চলিবে না। এখন মনুষ্যত্বের দিকে তাকাইয়া লক্ষ্যেরও পরিবর্তন করিতে হইবে। সাহস করিয়া বলিতে হইবে, যে শিক্ষা বাহিরের উপকরণ তাহা বোঝাই করিয়া আমরা বাঁচিব না, যে শিক্ষা অন্তরের অমৃত তাহার সাহায্যেই আমরা মৃত্যুর হাত এড়াইব।
শিক্ষা বিষয়ে তাঁর এই উপলব্ধি বিদ্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্ব থেকেই। অজিতকুমার চক্রবর্তীকে ১৯১৩ সালের মার্চ মাসে বিদেশ থেকে লিখেছিলেন-
“আমাদের বিদ্যালয়ে এই একটি বিশেষত্ব আছে যে, বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে অখন্ড যোগে আমরা ছেলেদের মানুষ করতে চাই, কতকগুলি বিশেষ শক্তির উগ্র বিকাশ নয়, কিন্তু চারদিকের সঙ্গে চিত্তের মিলনের দ্বারা প্রকৃতির পূর্ণতা সাধন আমাদের উদ্দেশ্য। এটা যে কত বড় জিনিস তা এদেশে এলে আমরা আরো স্পষ্ট করে বুঝতে পারি। এখানে মানুষের শক্তির মূর্তি যে পরিমাণে দেখি পূর্ণতার মূর্তি সে পরিমাণে দেখতে পাইনে।”
লীডস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাইকেল স্যাডলারকে সভাপতি করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় একটি ‘এডুকেশন কমিশন’ গঠন করে স্যাডলার জোড়াসাঁকোয় এসে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন ১৩২৪ সালের ২ অগ্রহায়ন। তিনি রোটেনস্টাইনের কাছ থেকে পরিচয়পত্র এনেছিলেন। কবির সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে তিনি রোটেনস্টাইনকে চিঠিতে লেখেন-ণবংঃবৎফধু ও ংধি ঞধমড়ৎব ভড়ৎ ঃযব ভরৎংঃ ঃরসব ধহফ ভড়ঁহফ ঃযধঃ, ঃযধহশং ঃড় ুড়ঁৎ ষবঃঃবৎং, যব বিষপড়সবফ সব াবৎু শরহফষু. ঐব রং বিষষ, ধহফ ধংশবফ সব ঃড় ারংরঃ যরং ংপযড়ড়ষ যিরপয ও ংযধষষ পবৎঃধরহষু ফড় রভ ড়ঁৎ পৎড়ফিবফ ঈধষপঁঃঃধ ঢ়ৎড়মৎধসসবফ ধষষড়ংি ঁং রঃ ষধঃবৎ.’। কবির আমন্ত্রণে স্যাডলার শান্তিনিকেতনেও যান। কমিশনের রিপোর্টে শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রম নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা থেকে বোঝা যায় যে কবির বিদ্যালয়ের প্রতি স্যাডলারে অনুরাগ ছিল প্রশংসাপূর্ণ। বিশ্বকবির প্রতি আমাদের ও প্রশংসাপূর্ণ শ্রদ্ধা।  আমরাও আমাদের দেশে বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে অখন্ড যোগে ছেলে মেয়েরা মানুষ হোক, সে প্রত্যাশায়। 


লেখক: গবেষক ও সাবেক অধ্যক্ষ
মোবাইল:০১৭১১৫৭৯২৬৭



0 comments:

Post a Comment