স্মরণ: শওকত আলী
আলী ফোরকান
জন্ম : ১৯১৮ সালের ২০ এপ্রিল
মৃত্যৃ: ১৮ আগস্ট ১৯৭৫
আজ ১৮ আগস্ট। সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শওকত আলীকে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনসহ প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামে শওকত আলীর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত কাছের মানুষ, বন্ধু এবং বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা ছিলেন শওকত আলী। বঙ্গবন্ধু ডাকতেন শওকত মিয়া। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলেন তিনি। ১৯৫৩ সালের সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকায় শওকত আলী সম্পর্কে লেখা হয়, ‘তিনি বর্তমানে ঢাকা সিটি আওয়ামী লীগের চিফ অর্গানাইজার’। শওকত আলী ১৯১৮ সালের ২০ এপ্রিল পুরান ঢাকার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন বাঙালি জাতির কাছে তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভাষা আন্দোলনের সব কয়টি অধ্যায়ে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামেও তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালে শওকত আলীর ১৫০নং চক মোগলটুলীর বাড়িটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন ঘাঁটি ও আশ্রয়স্থল। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন বৈঠকসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহযোগিতাও করতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা একাধিকবার এই বাড়িতে হানা দেয়। তারা শওকত আলীকে হত্যার অপচেষ্টা চালায় এবং ব্যর্থ হয়।
ঐতিহাসিক দিক দিয়েও শওকত আলীর ১৫০নং চক মোগলটুলীর বাড়িটি অধিক গুরুত্ব বহন করে। এটি একটি ঐতিহাসিক বাড়ি এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি যাদের পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে তারা শওকত আলী (বঙ্গবন্ধুর শওকত মিয়া) এবং তার ১৫০নং চক মোগলটুলীর বাসভবন সম্বন্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার দুঃসংবাদ শুনে শওকত আলী হতবিহ্বল ও বিমর্ষ হয়ে পড়েন এবং অকস্মাৎ তার ১৫০নং চক মোগলটুলীর নিজ বাসভবনে মারাত্মক ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৭৫-এর ১৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাঙালি জাতির একজন গর্বিত সন্তান হয়ে তাদের মাঝে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ভাষা আন্দোলনে তার কৃতিত্বপূর্ণ ও গৌরবময় অবদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শওকত আলীকে ২০১১ সালে মরণোত্তর ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করেন এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশন মহান ভাষা আন্দোলনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে শওকত আলীর নামে ধানমণ্ডির ৪/এ সড়কটির নামকরণ করেন।
আমার বাবা শওকত আলীকে নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ReplyDeleteমহিউদ্দিন আল আমান শাহেদ ।
ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শওকত আলীর সন্তান ।
আমার বাবা শওকত আলীকে নিয়ে লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ReplyDeleteমহিউদ্দিন আল আমান শাহেদ ।
ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শওকত আলীর সন্তান ।