পরিবেশ : যে কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে
আলী ফোরকান
নানা কারণে দিনকে দিন বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে প্রকৃতির উপর। বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্বিপাক। পাশাপাশি রোগব্যাধির কবলে মানুষ হারাচ্ছে প্রাণ। পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা এমন পরিস্থিতিতে বনায়নের পাশাপাশি নির্বিচার বৃক্ষ নিধন তথা বনাঞ্চল উজাড় বন্ধের ওপর তাগিদ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহল ও পরিবেশ রক্ষায় দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। বেশ কিছু বিষয়ে সেসব বৈঠকে সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিবেশের উপর কুঠার আঘাত বন্ধ হয়নি। এমন অবস্থায় পরিবেশবাদী সংস্থা রাইটস এন্ড রিসোর্সেস ইনিশিয়েটিভ পিলে চমকানো তথ্য উপস্থাপন করেছে। সংস্থার মতে, ভূমির মালিকানার অভাবে বিশ্বের অন্যান্য অংশের তুলনায় আফ্রিকার দেশগুলোতে আশংকাজনকহারে বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাচ্ছে। সংস্থার হিসাব মতে, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে ৩ শতাংশ বনের মালিকানা কমিউনিটিভিত্তিক হলেও আফ্রিকার দেশগুলোতে এ হার ২ শতাংশেরও কম। পক্ষান্তরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আফ্রিকায় বন উজাড়ের হার চারগুণ বেশি। চলতি ধারা অব্যাহত থাকলে কঙ্গো অববাহিকায় অবস্থিত দেশগুলোর বনাঞ্চল আগামী ২৬০ বছরে পুরোপুরি উজাড় হয়ে যাবে। সংস্থাটির এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ভূমির মালিকানা জনগণের হাতে থাকলে বন উজাড় হওয়ার হার কমতে পারে। একই কারণে জলবায়ুর পরিবর্তনও হবে কম হারে। তার পরিপ্রেক্ষিতে দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হতে পারে। সম্প্রতি ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াওন্ডেতে আয়োজিত বৈঠকে আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার ফরেস্ট কমিউনিটি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বলা হয়েছে অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, জাম্বিয়া, মালি, মোজাম্বিক, নাইজার, সুদান ও তাঞ্জানিয়াসহ বেশ কিছু দেশে কমিউনিটি ল্যান্ড রাইটস (সামাজিকভাবে ভূমির মালিকানা) আইন প্রণয়ন অথবা সংশোধন করেছে। তা সত্ত্বেও উদ্ভুত সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। রাইটস এন্ড রিসোর্সেস ইনিশিয়েটিভের কো-অর্ডিনেটর অ্যান্ডি হাইট বলেন, কোন কোন দেশে স্থানীয় বাসীন্দাদের ভূমির মালিকানা স্বীকার করা হলেও এখনও ঐসব দেশে বনাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে সরকারই। পরিবেশবাদীদের অভিমত, স্থানীয় বাসিন্দা বিশেষ করে মহিলাদের ভূমির মালিকানা দেয়া হলে বন উজাড় হওয়া কমতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের হারও কমতে পারে উল্লেখযোগ্যভাবে।
0 comments:
Post a Comment