Thursday, June 30, 2016

পরিবেশ: দূষণ রক্ষার দাওয়াই

পরিবেশ: দূষণ রক্ষার দাওয়াই
আলী ফোরকান
কালো ধোঁয়া সারাবিশে^র অন্যতম সমস্যা। বিশেষ করে তৃতীয় বিশে^র দেশগুলোতে এর ভয়াবহতা আরো বেশি। এর ক্ষতিকর প্রভাবে মানব দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগ জš§ায়। এ ধোঁয়া যে শুধু মানুষ বা প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর, তা নয়; এর ক্ষতিকর প্রভাবে উদ্ভিদেরও আয়ু কমে যায়। ব্যাহত হয় বৃ™িব্দ। এখানেই শেষ নয়। গাছের পাতার প্রকৃত রঙও নস্ট করে ফেলে কালো ধোঁয়া। এ কারণেই সাধারণত শহরের রাস্তার পাশের গাছ দুর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকে। আয়ুস্কাল ও কম। আর পাতার বিকৃত রঙও লক্ষণীয়। শহরে কালো ধোঁয়া উৎপন্ন করে মোটরগাড়ি। পেট্রোলের চেয়ে ডিজেলচালিত গাড়ি বেশি কালো ধোঁয়া উৎপন্ন করে। সেই ধোঁয়ায় ভাসমান ধুলিকণার পরিমাণও অনেক বেশি। এই ধুলিকণার অনেকটাই রাস্তার পাশের গাছের পাতায় আটকে যায়। ধুলিকণা জমতে জমতে পত্ররচিদ্র্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সালোক সংশেèষণ প্রত্রিক্রয়ার মাধ্যমে খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয়। গাছে সালোক সংশেèষণ ঘটায় ক্লোরোফিল। অত্যধিক দুষণের ফলে ক্লোরোফিলের পরিমাণও কমে যায়। এর ফলে গাছ আর কার্বনডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে অক্সিজেন ছাড়তে পারে না। এছাড়া গাছে থাকে অ্যাসকরবিক এসিড। এ এসিড গাছকে দুষণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। অত্যধিক দুষণের ফলে এই এসিডের পরিমাণও কমতে থাকে। এ বিষয়ে ভারতের কল্যাণী বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এক সমীক্ষা চালানো হয়। পরিচালিত সমীক্ষা থেকে একটি গবেষণাপত্রও তৈরি করা হয়েছে। কলকাতার শ্যামবাজার, উল্টোডাঙ্গার মুচিবাজার এবং স্লটলেকের পিএনবি মোড়ে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। রাস্তার পাশের বট, অশ^ত্থ, নিম, আম, কাঞ্চন, বোগেনভেলিয়া, দেবদারু এবং জারুল গাছের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। কেষ্টপুরে পরিবেশ দুষণ খুবই কম। সেখানকার একই প্রজাতির কয়েকটি গাছের ওপর নজর রাখা হয়েছিল গাছের বৃদ্দি ও স্বাস্থের তুলনা করতে। সমীক্ষার জন্য নির্বাচিত আটটি প্রজাতির মধ্যে নিম, আম এবং বোগেনভেলিয়া সবচেয়ে বেশি দুষণ সহ্য করতে পারে। মজার ব্যাপার হলো, অনেক আগে থেকেই কলকাতা বন দফতর রাস্তার পাশের গাছগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে দেয়। এতে পাতার ধুলিকণা পরিস্কার হয় এবং সালোক সংশেèষণ প্রত্রিক্রয়ার মাধ্যমে গাছ খাদ্য তৈরি করতে পারে। যান দুষণ বিশেষজ্ঞ সোমেন্দ্রমোহন জানান, ডিজেলের ধোঁয়ায় থাকে অনেক বেশি পরিমাণ ভাসমান কণা। এজন্য রাজ্য পরিবেশ দফতর ডিজেলচালিত গাড়ির দুষণ নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়েছে। আগামীতে কোনো ডিজেলচালিত গাড়ি ধোঁয়া পরীক্ষার ছাড়পত্র ব্যতীত ডিজেল কিনতে পারবে না। এ অভিযান সফল হলে শহরের বাতাসে দুষণ হয়তো কিছুটা কমবে। মানুষ একটু স্ব^াচ্ছন্দ্যে শ^াস নিতে পারবে। বাঁচবে গাছগুলোও। আমাদের দেশেও পরিবেশ দুষণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গাড়ির কালো ধোঁয়ায় নগরজীবন দুর্বিষহ। আমাদের সরকারও তো আইন করতে পারে। ধোঁয়া পরীক্ষার ছাড়পত্র ছাড়া কোনো গাড়ি ডিজেল কিনতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জিজ্ঞাসা করতে পারে সার্টিফিকেট আছে তো?

0 comments:

Post a Comment