হুমকির মুখে উপক‚লীয় আবাদি জমি
আলী ফোরকান
দÿিণ উপক‚লীয় অঞ্চলের আবাদি জমি অত্যধিক লবণাক্ততায় জ্বলিয়া যাইতেছে। সন্দেহ নাই ইহার পিছনে রহিয়াছে জলবায়ু এবং ভ‚প্রকৃতিগত পরিবর্তন। জানা যায়, লবণাক্ততার ফলে ব্যাপকভাবে ÿতিগ্র¯Í হইতেছে উপক‚লীয় এলাকার সকল কৃষি উৎপাদন। বিআইডিএসের এক সমীÿায় জানা যায়, উপক‚লীয় ও তীরবর্তী ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় লবণাক্ত মাটি রহিয়াছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যদি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আর ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়ে, তাহা হইলে আরও ১৬ হাজার বর্গকিলোমিটার উপক‚লীয় ভ‚মি তলাইয়া যাইবে আর লবণাক্ততা অগ্রসর হইতে থাকিবে আরও ভিতরে। ইতোমধ্যে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপক‚ল পর্যন্ত ৬০০ বর্গমাইল আবাদি জমিতে লবণের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া শুরু হইয়া গিয়াছে। লবণাক্ততার কারণে প্রতি বৎসর কয়েকশত কোটি টাকার ফসল নষ্ট হইতেছে। জমিতে লবণাক্ততার কারণে চাষাবাদ যেমন ব্যাহত হইতেছে পাশাপাশি গো খাদ্যের অভাবে গবাদিপশুর সংখ্যাও কমিয়া যাইতেছে। কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের (সিডিপি) একটি প্রকাশনায় উলেøখ করা হইয়াছে, লবণাক্ততার ফলে বৃহত্তর খুলনায় ধানের উৎপাদন একর প্রতি ৫০-৬০ মণ হইতে ৫-৬ মণে নামিয়া আসিয়াছে। তাহাছাড়া লোনা পানির তোড়ে এই অঞ্চলের অনেক বড় বড় গাছপালাও নিশ্চিহ্ন হইয়া গিয়াছে। নারিকেল, সুপারিসহ সবজি উৎপাদনও মারাত্মকভাবে ÿতিগ্র¯Í হইতেছে। পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাবার পানির সঙ্কটও তীব্রতর হইতেছে। ইহার ফলে আর্থ-সামাজিক সমস্যা বৃদ্ধি পাইবে। ধ্বংস হইয়া যাইতে পারে চিংড়ি চাষ। দেশের মোট আবাদি জমির প্রায় ২০ শতাংশই উপক‚লীয় অঞ্চলে। উহার মধ্যে বৃহত্তর খুলনা বিভাগ অর্থাৎ দÿিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এই জমির ১৩ শতাংশ পড়িয়াছে। খাদ্য উৎপাদন যদি লবণাক্ততার জন্য হ্রাস পাইতে থাকে তাহা হইলে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাইতে থাকিবে। বাংলাদেশে ধানের প্রজাতিগুলি লবণ-সহনীয় নয়। ফলে জমিতে লবণাক্ততা বাড়িলে উপক‚ল অঞ্চলে ধানের ফলন কমিয়া যাওয়াই স্বাভাবিক। উজানে পানি প্রত্যাহার উপক‚লীয় নদী-খালের পানিতে লবণাক্ততা বাড়িবার প্রধান কারণ। লবণাক্ততা প্রতিরোধকল্পে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করাই এখন সময়ের দাবি। এই সমস্যা সমাধানের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ, মাটির লবণ শোধন ব্যবস্থা এবং লবণসহনশীল ধানের আবাদ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দÿিণ উপক‚লের ৭০ লÿ একর আবাদি জমিকে ব্যাপক ÿতির হাত হইতে রÿা করা সম্ভব বলিয়া অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রয়োজন জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
0 comments:
Post a Comment