প্রকৃতি : হারিয়ে যাচ্ছে পাখি
আলী ফোরকান
পাখি প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্যের প্রতীক। সবুজ অরণ্যে পাখ-পাখালির ক‚জন এক মোহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি করে। তাড়িত মনকেও ÿণিকের জন্য করে তোলে আবেগময় উš§াতাল। তাই প্রকৃতিপ্রেমী কবিদের অ¯িÍত্বে পাখির উপস্থিতি আরে বেশি ধরা দেয়া। পাখি শুধু নন্দনতত্তে¡র খোরাকই যোগায় না, পাখি প্রকৃতিকে ফুলে-ফলে ভরিয়ে দেয়ার জন্য বিরাট অবদান রাখে। কেননা ফুল-ফসলের পরাগায়নে আরো স্পষ্ট করে বললে প্রজনন বা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিশেষ অবদান রাখে, যা অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু বা¯Íবতা হচ্ছে মানুষ্যকুল তার এ পরম হিতৈষীকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে ফেলছে নিজেদের প্রয়োজনে, যা কিনা রীতিমতো আত্মঘাতী কর্মকান্ডের সামিল। তেমনই উদ্বেগজনক একটি বিষয়ের অবতারণা করেছে একটি পরিবেশবাদী সংস্থা। তাদের ভাষায়, অনুক‚ল পরিবেশ, আবাসস্থলের অভাবে পৃথিবীর সাধারণ পÿীকুল ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যার পরিণতি ভয়াবহ। পরিবেশবাদী সংস্থা বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের এক সমীÿা রিপোর্টে উলেøখ করা হয়েছে, ইউরোপে সাধারণ পাখির ৪৫ ভাগ বিলীন হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার পরিসংখ্যান রীতিমতো উদ্বেগজনক। কেননা সেখানকার ৮০ ভাগেরও বেশি পাখি নিঃশেষ হয়ে গেছে। বলা হয়েছে গত ২৬ বছরে ইউরোপের ২০টি দেশের ১২৪টি প্রজাতির অন্তত: ৫৬টি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এÿেত্রে শস্যÿেতে বিচরণকারী পাখি বিলুপ্তির হার ৭৯ ভাগ। আফ্রিকার অবস্থাও নিতান্তই উদ্বেগজনক। শিকারীদের খপ্পরে পড়ে সেখানকার অসংখ্য পাখি প্রতি বছর নিঃশেষ হেয় যাচ্ছে। এশিয়ার দেশুগলোতে অতিথি পাখি শিকারের প্রবণতা মারাত্মক। ফলে ৬২ ভাগ পাখি বিলুপ্ত হয়েছে শিকারীদের হাতে।
গবেষকদের মতে শুধু শিকারীদের লোলুপদৃষ্টিই পাখি ধ্বংসের একমাত্র কারণ নয়। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসও এÿেত্রে অন্যতম কারণ। প্রতিদিন পৃথিবীর কোন না কোনখানে জীববৈচিত্র্যের ওপর হাত পড়ছে। ফলে পাকি হারাচ্ছে তার বিচরণ ÿেত্র। খাদ্য সংকট এÿেত্রে ফেলছে আরো ভয়াবহ প্রভাব। বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী তথ্য পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর মতে, সংশিøষ্ট সরকারগুলো জীববৈচিত্র্য রÿায় যে তহবিল গঠনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল ধরিত্রী সম্মেলনে -তা পূরণে ব্যর্থতাই পাখি বিলুপ্তিকে ত্বরান্বিত করছে। তাদের ভাষায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২২৬টি প্রজাতি বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে ১৯০টি প্রজাতি অচিরেই বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাদা পালকের ভারতীয় চিলের ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ একবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশেষ করে শস্যÿেতে বিষটোপ এবং গবাদিপশু চিকিৎসায় প্রদাহরোধক ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের ফলে ভারতীয় সাদা চিলের অ¯িÍত্ব এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। কারণ ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ সেবনকারী গবাদিপশুর বর্জ্য বিষাক্ত হয়ে যায়, যা ভÿণ করে মারা যায় চিল। পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর দাবি প্রতিশ্রæতি মোতাবেক সরকারগুলো যেন শিগগিরই তহবিল সংগ্রহের কাজ শেষ করে। তা না হলে জীববৈচিত্র্যের আশংকাজনক অবনতিতে পৃথিবী মনুষ্যবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে ক্রমান্বয়ে। স‚ত্র: বিবিসি ওয়েব সাইট
0 comments:
Post a Comment