নদী বাচাঁন-দেশ বাচবে
ফোরকান আলী
নদীর সাথে মানুষের সম্পর্ক চিরকালের। জীবন-জীবিকা ও সভ্যতার অগ্রগতি ও ঘটেছে নদীর তীরে। সিন্ধু নদীর তীরে সিন্ধু সভ্যতা। নীল নদের তীরে মিসরীয় সভ্যতা। রাইনের তীরে জার্মান সভ্যতা । ডনভ্যানুয়েবের তীরে রুশ সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের ও প্রায় শহর, নগর, বাণিজ্য কেন্দ্র বিভিন্ন নদীর তীরে গড়ে উঠে। রাজধানী ঢাকা বুড়িগঙ্গা, নারায়ণগঞ্জ শীতল্যা, চট্টগ্রাম কর্ণফুলি, ময়মনসিংহ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে গড়ে উঠে। বাংলাদেশের সাথেও নদীর সম্পর্ক নাড়ীর। নদীমাতৃক বাংলাদেশে ছোট-বড় ২৩০ টি নদ-নদী (৭০০ টি নদী-উপনদী) রয়েছে। যার ৫টি আর্š—জাতিক নদী। আর ৫৭ টি ২ দেশে ভেদ করেছে। দেশের অধিবাসীদের জীবনযাত্রায় এ সব নদ-নদীর প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। এদেশের জীবন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসব নদ-নদীর ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের যে সব এলাকায় সড়ক ও রেলপথ নেই সেসব অঞ্চলে নদী পথই যোগাযোগ ও পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু মানুষ ও প্রকৃতির আচরণ নদীগুলোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একারণে দেশের ২৩০ টি নদ-নদীর (৭০০ টি নদী-উপনদী) বেশির ভাগই আজ মৃত-অর্ধমৃত । গত অর্ধ শতাব্দী পূর্বেও দেশে বর্তমানের দ্বিগুণ নদী ছিল। এতথ্যই প্রমাণ করে বর্তমান প্রোপটে নদী বাঁচানো কতটা অপরিহার্য।
নদী: বাংলাদেশের নদীমালা আমাদের গর্ব। বাংলাদেশের নদ-উপনদী সমম্বয়ে গড়ে উঠেছে বৃহৎ নদীব্যবস্থা। বাংলাদেশের নদ-নদীর মোট দৈর্ঘ প্রায় ২৪,১৪০ কিলোমিটার। তবে নদীর নামকরণের েেত্র কোন নীতিমালা অনুসরণ করা হয় না। প্রায় একই নদ-নদী,উপনদীর শাখা-প্রশাখার এলাকা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়। বিশেষত দেশের দণিাঞ্চলের নদ-নদীগুলো এত বেশি শাখা- প্রশাখায় বিভক্ত যে, এ গুলোকে আলাদা নামে চিহ্নিত করা সব েেত্র সম্ভব নয়। এ সমস্ত অসুবিধা সত্বেও দেশের নদী গুলোর এলাকাভিত্তিক তালিকা নিম্নে সংযোজিত হল।
রংপুর: দুধকুমার, রাইডাক, ধরলা, তিস্তা, স্বাতি, বুড়িখোড়া-চিকি, খারভাজা, ঘাগট, যমুনেশ্বরী, আখির খারখারিয়া, বাসমাই, দেওনাই, চিকি, নীলকুমার, ভরোলা, গদাধর, সনকোশ, নোয়াডিহিং, ডিসাঙ্গ, ডিখু, কালাঙ্গ, কাপিলি, তিতাস-গিরি, ব্রহ্মপুত্র । (২৫টি)
দিনাজপুর: পাথরাজ, তালমা, পুনর্ভবা, চেপা, টাঙ্গন, ডাহুক, ঘোড়ামারা, যমুনা, কোরাম, আত্রাই, কুলিকা, বড়াল, গর্ভেশরী, যমুনেশ্বরী, জলঢাকা, তোরসা, কল্যাণী, রাইদক। (১৮ টি)
রাজশাহী: ফকিরানী-বারানাই,শিব-বারানাই, মহানন্দা,পাগলা, মুসাখান, গঙ্গা, বারানাই, হোজা, গোদারি, গুমানি। (১০ টি)
পাবনা: গুর, বগুড়া-ইছামতি, বড়াল, হুরাসাগর, দূর্গাদহ, সুখদহ, বগুড়া (ইউসিয়াম), তালান । (৮ টি)
বগুড়া: করতোয়া, কথাকলি, বাঙালি, তুলসী গঙ্গা, ছোটো যমুনা, নসার, বাদল। (৭ টি)
ঢাকা: বংশী, তুরাগ টঙ্গী খাল, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, গাজীখাল, বানার, বালু, ল্যা, লৌহজং, ফুলদি, ভুবনেশ্বরী, কীর্তিনাশা বা শ্রীপুর, (শীতল্যা), ইছামতি, মালিক বাদের খাল, গাজাহাটার খাল, ইলশামারী। (১৮ টি)
ময়মনসিংহ: ঝিনাই, আইমন, সুতিয়া, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ঘরোটা নদী, সিমাহালি, নরসুন্দর, বোথাই, নিতারি, সোমেশ্বরী, কংশ, গুনাই, কাচামাটিয়া, পানকুরা, সাইদুল, মোগরা, রাংরা, খারমোরী, মহাদেব, যদুকাটা, ধানু, বোয়ালাই, শিরখালি, চেল্লাখালি, মতিচিক, চালহি, বংশাই, মানস, পুতিয়া, জিনজিরাম, সুবনফিরি, বলেশ্বর, ভোগাই, কংস, কউলাই, ধনু, সিলাই, খারমেনি। (৩৭ টি)
সিলেট: সুরমা, পিয়াইন, সারি, গোয়াইন, বাগরা গাঙ, নওয়া গাঙ, শেওলা, ধামালিয়া, মনাই বড়দাল, জুরি, মনু, ধলাই, লাংলা, (কারাঙ্গি), খোয়াই, সুতাং, কুশিয়ারা, মাধবপুর, মহাসিং, খাজাঞ্চি, ভট্টখাল, কালনি, জামালপুর, বরাবা, লভা, হরি, বোগাপানি, ধরিয়ানা, ধোয়াই, যদুকাটা, ধলা-ধলাই গাঙ, গোপলা-লাংলা, মোগাই-চলতি, রক্তি, পৈন্দা, ভেরা, মোহনা, ধনু-বৌলাই। (৩৬ টি)
কুমিল্লা: তিতাস, গোমতি, ধনাগোদা,ডাকাতিয়া, দাপলা গঙি, হাওরা, কাঠালিয়া, সোনাই, তাটনুল, বুড়ী, কুলিয়াঝুরি, বাতাকান্দি, মরিচা, আরশি, গোপী, মারজোরা, ঘুঙ্গট, খেরুনদী, বৈজানী, পাগলী, শিরাই, চান্দিনা খাল, কাকড়ি, মালদা, অ্যান্ডারসন খাল, মতলব, উদনন্দি বা উদমধি, কাগনি, হরিমঙ্গল, কুরুলিয়া, জায়দিন্দ, সোনাইমুড়ি, হন্দাচেরা, জাঙ্গালিয়া, দুরদুরিয়া, বুড়িগঙ্গা বা বিজয়গঙ্গা, কালাডুমুরিয়া, বুড়িগাঙ, বিজয়পুর খাল, চৌদ্দগ্রাম খাল,ন লিয়া, বিজলী, ঘুঙ্গর। (৪৪ টি)
নোয়াখালী: মধুখালি, রহমতখালি খাল, মুহুরী, ছোটো ফেনী, সিলোনিয়া, ফেনী, ভুলুয়া, হাতিয়া, আতিয়াবারি খাল, কালির কাল, পাটকাটা খাল, কথাকলি খাল, বাপারাশি খাল, গোয়ালখালি খাল,আত্রা খাল, হুরা খাল, গাহোযাতলি খাল, হালদা, ইছামতি। (১৯ টি)
চট্টগ্রাম: হালদা, কর্ণফুলি, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, বাকখালি, সাতাল খাল, ইছামতি, মুহুরী, কাবলং, রাখিয়াং, সত্তা, শিল্পা, তুইবাং, ককা, শ্রীমা, বোয়ালখালি, মগদাই, ডংখাল, নারায়ণগিরি, চিরিঙ্গা, ইছাখালি, কুরসাই, সিঙ্গুর গঙ্গা কাপ্তাই, রিগারি খিংর, চাঁদখালি, কুমিরাখালি,চেঙ্গি, মাইনি। (৩০ টি)
কুষ্টিয়া: মাথাভাঙ্গা, গড়াই, জলাঙ্গি, মাগর খালি। (৪টি)
যশোর: আপার ভৈরব, লোয়ার ভৈরব, চিত্রা, বেগবতী, নবগঙ্গা, চন্দনা, কপোতা, বারাসিয়া, খোলপেটুয়া, এলেংখালি, পানগুবি, কবা, কালীগঙ্গা, কাঠিপাতা, দড়াটানার খাল, মরিছোপ, চাঁদখোনি, পাংগানি, নাইনগত্র সমুদ্র, বড় পাঙ্গা, কুমার, বড় গাংদিয়াদহ, আমলা মদরপুর, ডাকোয়া, মরা গড়াই, বারাসিয়া, পালং, অত্রাই। (২৮ টি)
ফরিদপুর: মধুমতি, কুমার, আড়িয়াল খাঁ, আতাই নদী, মাদারিপুর বিল রুট। (৫ টি)
খুলনা: ভদ্রা, আঠারোবাঁকি, আলাইপুর খাল, খোলপেটুয়া, শিবসা, রূপসা, বলেশ্বর, গাসিয়াখালি, পশুর, আড়পাঙ্গাসিয়া, পাঙ্গানিয়া, ওড়াটামা, ইছামতি, নমুদ সমুদ্র, সোনাগাঙ্গ, ভাঙরা, কুঙ্গা, মালঞ্চ, সাতীরা, সুতাখালী, রায়মঙ্গল, মারজাত, হরিণভাঙা, গলাঙ্গী, হরিপুর, সোনাইপুর, বুধহাটার গাঙ, ঢাকি, গালঘেমিয়া, উজীরপুর, কাটাখাল, গুচিয়াখালী, বদুরগাছা, ডেলুটি, মানস, কয়রা, আড়োয়াশিবসা, কালিন্দি, মজুদখালি খাল, আকরার খাল, মংলা, সোলা, পায়রা, আন্দ্রনমুখো, মুহুরী, মোদলা, হাড়িয়াভাঙা, গানগুবি, কচা, পাকাশিয়া, মৈয়ার গাং, কাবিপাতা, ঝাঁক, শিয়ালির খাল, নারায়ণখালী, কদমতলি, বাংরা, শীলা, কলাগাছিয়া, বাশঁতলী,সালখি, শাকবাড়িয়া, আলকি, মানিকদিয়া, চন্দেশ্বর, পানকুশি, বলেশ্বর, বলমার্জার বা মাঞ্জাল, কাগীবাগ, রামপাল। (৭১ টি)
বরিশাল: বিষখালী, স্বরূপকাঠী বা সন্ধ্যা, বাবুগঞ্জ, হেমদা, লোহালিয়া, শাহবাজপুর, নয়াভাঙ্গা, রাজগঞ্জ, গণেশপুর, দুবালদিয়া, তোরকি বা তুর্কি, কীর্তনখোলা, ধরমগঞ্জ, ঝিলিনহা, মনকুঠা, মুলতানি, কারখোমা, আলগি, ধুলিয়া, গঙ্গালিয়া, বুড়িশ্বর, কালীগঙ্গা, হরিণঘাটা, পাতুয়া, তেঁতুলিয়া, ধলিয়া, নীলাশী, নবগঙ্গা, ভোলা, পাকাশিয়া, চন্দনা বা পাংশা, জাবনাসবাদ, বলেশ্বর, শশ্মানঘাট, মৈয়ারগাং, নয়া ভাঙনী, গৌরনদী, কালাবদর, মীরগামারী, কচা বা কোচা, লতা, ইলিশ বা ইলশা, কবাখালি, মধুমতি, আন্ধার মানিক, রাবণাবাদ বা পটুয়া, বুড়া গৌরাঙ্গ, বাকের গঞ্জ, আমতলা, ধানসিঁড়ি, সুগন্ধা, ঝালকাঠি, চালনা, এলেংখালি, নলবিটি, খরবোরাবাদ, গলাচিপা। (৫৭ টি)
সুন্দরবন অঞ্চল: বলেশ্বর, সুমতি, ছাপড়াখালি, বড় শেওলা, হরিণ চীনা, শরণখোলা, আমবাড়ে, চান্দেশ্বর, কাপা, কালিদা সঠকা, জাতো, মরা পশুর, ডাংমারি, বিলে, ছুতোরখালি, চলোবগি, হরমহল, বেড়ি-আদা, বাকির খাল, আড়-শিবসা, হড্ডা, মহিষে, ছাছোন হোগলা, মজ্জত, শাকবাড়ে সিঙ্গা, গোলখালি, কুকুমারি, কলাগাছি, ডোমরখালি, হংসরাগ, কাগা, নীলকমল, খেজুরদানা, সেজিখালি, বাইনতলা, বাঙ্গাবালী, দোবেকি, ফিরিঙ্গি, মানদো, কেওড়াসুতি, বন্দো, ধকোলা, লতাবেড়ি, ভেটুইপাড়া, বালুইঝাঁকি, কালিকাবাড়ি, বেকারদোন, আন্ধার মানিক, ঝালে, পাটকোষ্টা, বাসে, গোলভকসা, ধানিবুনে, হরিখালি, মুনসার বেড়, পুস্পকাটি, গঙ্গাসাগর, কালী লাই, বগী চেঁচানে, কুঁড়েখালি, ভূয়ের দনে, কাঠেশ্বর, সোনারুপাকালি, দুধমুখ, লাঠিকারা, তেরকাটি, ধানঘরা, আড়বাসে, দণিচরা, সাপখালি, কদমতলি, বুড়ের ডাবুর, লক্ষ্মী পশুর, মানকি, আশাশুনি, তালতক্তা, ধ্বজিখালি, মন্ডপতলা, নেতোখালি, ভায়েলা, বাগানবাড়ি, ঝাড়াবাগনা, বগাউড়া, বক্্রখালি, চাইলতাবাড়ি, সিঙ্গড়তলি, মাথাভাঙ্গা, নারায়ণতলি, কইখালি, মথুরা, খাসিটানা, আগুনজ্বালা, ফুলঝুরি, মালাবগা, খামুরদানা, উবদে, গুবদে, সোনাইপাঁঠী, ধোনাইর গাঙ, কানাইকাঠি, মরিচঝাঁপি, নেতাই তালপাঁঠী, ধনপতি, রাগখালি, মুক্ত বাঙাল, আরিজাখালি, দুলোর টেক, যিনগিলি, বিবির মাদে, টেকাখালি, দেউর যাঁদে, চামটা কামটা, কুঞ্চে মাঠে, ব্যয়লা কয়লা, মাদার বাড়ে, বয়ার নালা, হানকে, ধনচের নদী, মূল্যে মেঘনা, বাইলো, বেতমুড়ি, বুড়িগোল্লি, চুনকুড়ি, মায়াদি, ফুলবাড়ি, তালতলি, আংরা কনা, গাড়ার নদী, বাদামতলি, ভুতের গাঙ, বৈকুন্ঠ হানা, করপুরো, ছায়া হলড়ি, আড়ভাঙা, তালকপাঁঠি, খেজুরে কুডূলে, ছোটো শেওলা, কাঁচিকাটা, দাইর গাঙ, বৈকিরি, জালঘাটা, ইলিশমারি, ঝালকি, সাতনলা, মকুরনি, হেলার বেড়, কালিন্দে, শাকভাতে, গোন্দা, পালা, তেরবেঁকী, তালবাড়ে, হেড় মাতলা, ভুড়ভুড়ে ছদনখালি, ফটকের দনে, ভরকুন্ডে, কেদাখালি, নওবেকি, কলসের বালি, পানির খাল, কুলতলি, বড়বাড়ে, মুকুলে, মধুখালি, পাশকাটি, গোছবা, ঘাট হারানো, গাবান্দারা, লোকের ছিপি, বাহার নদীপার, বড় মাতলা, পায়রা ঠুনী, কালবেয়ারা, ঢুকুনী, পারশে মারী। (১৭৭ টি)
নদী দখল: জমি ও চর দখলের পাশাপাশি নদী দখলও চলে বাংলাদেশে। ঢাকা মহানগরী গডে উঠেছিল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে। ১৬০৮ সালেও এ নদীর ৬ টি শাখা নদী ছিল। কিন্তু আজ তার সবই চলে গেছে দখলদারদের গর্ভে। পত্রিকার রিপোর্ট মতে, ২৪৪ জন ভুমিদস্যু বুড়িগঙ্গার ৫০ একর দখল করে নিয়েছে। কর্ণফুলী, সুরমা,কীর্তনখোলা, করতোয়া, রূপসাসহ আরো ৭০ টি শহর সংলগ্ন ছোট-বড় নদী দখল হয়ে গেছে। রিপোর্টের তথ্যানুসারে ২ ল ভুমিদস্যু দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর বিরাট অংশ দখল করে আছে। দেশ নদীশুন্য মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার নদী উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইতিমধ্যে সফলতা ও অর্জন হয়েছে ।
নদী দূষণ: নদী শুধু দখলই নয়,দূষণের শিকারও। দেশের বেশির ভাগ নদী দূষণের কবলে পড়েছে। কৃষি জমিতে প্রচুর রাসায়ণিক সার প্রয়োগ হচেছ। যা বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে মিশে নদীতে গিয়ে পড়ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখাযায়, শুধু ১৯৮০-৮১ অর্থ বছরেই ২৬ ল টন রাসায়ণিক সার ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে এর পরিমাণ ৩০ ল টন ছাড়িয়ে গেছে। পরিসংখ্যানর সুত্রমতে, দেশের ৬০ ভাগ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করে না। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর ত্যাগকরা মলমুত্রের শেষ গন্তব্য নদী। লঞ্চ, ষ্টীমার, ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকেও প্রচুর তেল নদীতে নি:সৃত হয়। অপরিকল্পিত পয়নিস্কাশন,নদীর পাশের বিভিন্ন শিল্প ইউনিট ও ট্যানারীর বর্জ্য নদীর পানিকে দূষিত করছে। গ্রামাঞ্চলের নদীগুলোর পরিণতিও ক্রমে ক্রমে একই দিকে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ১৭ টি নদীর ৩৮ টি স্থানের পানি পরীা করে দেখেছে যে, এসব নদীর পানি দূষিত ও ব্যবহারের অযোগ্য। নদী দূষণের কারণে পানিতে অক্্িরজেন, হাইড্রোজেন, কার্বন, নিকেল, সিলিকনসহ ১৬-২০ টি উপাদান হ্রাস পাচ্ছে। যা নদীতে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব উপাদানের অভাবে নদীর বহু প্রজাতির মাছ ও জলজ উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে নদীভিত্তিক সমস্যার সমাধান করতে হবে দীর্ঘমেয়াদীভাবে। এদশের বেশিরভাগ মানুষের জীবন, জীবিকা ও সার্বিক উন্নতি নির্ভর করে নদীর ওপর। একারণে নদী সমস্যাকে অত্যধিক গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ দেশের নদী বাঁচলে, মানুষ বাঁচবে।
0 comments:
Post a Comment