Tuesday, March 20, 2018

এইডস প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই

এইডস প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই
আলী ফোরকান 
বাংলাদেশের ইতিহাস প্রাচীন এবং ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। বিশ্ব সমাজে একে পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরার দায়িত্ব যুব সমাজের। আর এ যুব সমাজ যদি ঘাতক ব্যাধি এইডস রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে জন্য দেশব্যাপী সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে এ রোগের সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাই আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজন উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ। সমাজিক সচেতনতা, রক্ত গ্রহণে সতর্কতা এবং সামাজিক জীবনে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা। এসবের মাধ্যমে এইডসের বি¯Íার রোধ করা যেতে পারে। এখানে আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন, এইচআইভি পজেটিভ ভাইরাস বহনকারী লোকদের সহসা এইডস রোগী বলে শনাক্ত করা কঠিন। কেননা দেহে এ মারাত্মক ভাইরাস লুকিয়ে থাকা সত্তে¡ও তা বছরের পর বছর সুপ্ত থেকে যেতে পারে। যার দেহে এইচআইভি পজেটিভ ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে, ১০ বছর পর হলেও তার দেহে এইডসের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। ইনজেকশনের মাধ্যমে যারা মাদক সেবন করে তাদের শতকরা ৪ ভাগ এইচআইভি সংক্রমণের শিকার। আর আমাদের দেশে এ ধরনের মাদকসেবীর সংখ্যা নেহায়েৎ কম নয়। মাদকাসক্তদের ছাড়াও অমিতাচারী জীবনে অভ্যস্ত নারী-পুরুষের সংখ্যা যেমন বেড়েই চলছে, তেমনি বাড়ছে বিশ্বব্যাপী এইডস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। আরও বিপদের কথা, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে এইডস সংক্রমণ ইতিমধ্যে মারাত্মক রূপ পরিগ্রহ করেছে। ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, নেপাল প্রভৃতি দেশে এইডসের জীবাণু সংক্রমিত নারী ও পুরুষের সংখ্যা বাড়ছে। এসব দেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের যাতায়াত দিন দিন বেড়েই চলছে। যারা প্রতিবেশী বা যে কোনো দেশে-বিদেশে যান না কেন সবাইকেই যথার্থ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় যুব সমাজের উদ্যোগী ভ‚মিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণভাবে পালন করছে। এইডস প্রতিরোধে যুব সমাজের ভ‚মিকা নানাবিধ কারণে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, গত ২৫ বছরে বিশ্বে আড়াই কোটির বেশি লোক এইডসে মারা গেছে। কেবল চলতি বছরেই মারা গেছে সম্ভবত ৩০ লাখের বেশি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এইচআইভি ভাইরাস বহন করছে অন্তত ৪ কোটিরও বেশি লোক। গত এক বছরে আরও ৫০/৫২ লাখের বেশির লোক এইডসে আক্রান্ত হয়েছে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমাদের দেশেও এইচআইভি/এইডসের ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে । এছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারতে ও আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েই চলছে। পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে আমরাও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশে এইচআইভি/এইডস-এ আক্রান্ত হওয়ার সবগুলো উপাদানই রয়েছে। যেমন ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারী বহুগামীতার মাধ্যমে রিকশাচালক, ট্রাকড্রাইভার, গাড়িচালক। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমণ ১% এর নিচে। তাই বলে আমাদের আশ্ব¯Í হওয়ার কিছু নেই। জরিপে আরো দেখা গেছে, মাত্র ৬৫% যুবক, প্রায় ২০% বিবাহিত নারী এবং ৩৩% বিবাহিত পুরুষের এইডস বিষয়ে ধারণা রয়েছে। আর আমাদের দেশ তথা পুরো বিশ্বে যুবক স¤প্রদায়ই এইডস আক্রান্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের জরিপে দেখা গেছে, নেশা গ্রহণকারীদের মধ্যে শতকরা ৪ জন এইচআইভি আক্রান্ত। এদের মধ্যে একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে ইঞ্জেকশন বহুজন ব্যবহার করার প্রবণতা রয়েছে। তাছাড়াও এসব আক্রান্ত নেশাগ্রহণকারীরা তাদের স্ত্রীর সঙ্গে এবং যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌনকর্ম করে থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ আচরণকারীদের মধ্যে যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌনকর্ম করার প্রবণতা ৭০ শতাংশের মধ্যে এইডস পাওয়া গেছে। এসব ক্ষেত্রে কনডমের ব্যবহারের প্রচলন খুবই কম। ফলে এইচআইভি/ এইডস ঝুঁকিতে এরাও রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও আমাদের ঝুঁকির পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে একটি জরিপে দেখা যায়,বিদেশে পাচার হওয়া মেয়েরা এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই যৌন ব্যবসার জন্য নারী পাচার করা হয়। অবৈধ এ ব্যবসার ফাদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে হাজার হাজার মেয়ে। বাংলাদেশের মেয়েরাও এ ফাদে পড়ছে। তবে এ ক্ষেত্রে বেশি ক্ষতিগ্র¯Í হচ্ছে নেপালের মেয়েরা। ভারতের পতিতালয়ে পাঠানো হচ্ছে তাদের। সেখান থেকে কম বয়সী মেয়েরা এইডসের ঝুকি নিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছে। যৌন ব্যবসার ক্ষেত্রে আরেকটি অপ্রীতিকর বিষয় সংযুক্ত হয়েছে। আর তা,চ্ছে,যেসব কম বয়সী মেয়েদের যৌন ব্যবসার জন্য বিদেশে পাচার করা হয় তারা তাদের নিজেদের দেশে ফিরে আসে এইডসের ঝুকি নিয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫ বছরের কম বয়সী যেসব মেয়েকে যৌন ব্যবসার জন্য পতিতালয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারাই বেশি এইডস ভাইরাসে সংক্রমিত হয়। পতিতালয় থেকে ফিরে আসার পর যখন পরিবার ও গ্রামের লোকেরা তাদের কাছ থেকে দূরে সরে যায়। তখন তারা বাধ্য হয়ে আবার যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আর এভাবেই এইডসের ঝুকি আরো বেড়ে যায়। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে সম্প্রতি ছাপা হওয়া ওই গবেষণা নিবন্ধে নেপালি মেয়েদের সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের ভারতে  এনে পতিতালয়ে যৌন ব্যবসায় জড়াতে বাধ্য করা হয়। অবশ্য এ সমস্যা অন্য দেশেও দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিবন্ধটির মূল লেখক জে সিলভারম্যান। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ পাবলিক হেলথের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট বিষয়ের প্রফেসর তিনি। চীনের ইউনান প্রদেশের মেয়েদের সাধারণত বিক্রি করা হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পতিতালয়ে। ইরাকের রিফিউজি ক্যাম্পগুলো থেকে মেয়েদের এনে বিক্রি করা হয় সিরিয়া ও জর্ডানে। আর আফগান মেয়েদের বিক্রি করা হয় ইরান ও পাকি¯Íানে। তারা সবাই একইভাবে এইডসের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর সিলভারম্যান। তার মতে তারা চীনের দক্ষিণ অঞ্চল, আফগানি¯Íানসহ আরো অনেক জায়গায় এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে। সিলভারম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ দেশই যৌন ব্যবসা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু এইচআইভি আক্রান্তদের নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। জাতিসংঘের এইডস সংস্থা ইউএন এইডস-এর নেপাল বিষয়ের সাবেক সমন্বয়কারী অরোরিটা মেনডোজা গবেষণাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রথমবারের মতো আমি জানতে পারলাম যৌন ব্যবসার জন্য বিদেশে পাচারকারী মেয়েরা এইচআইভি সংক্রমণের হুমকিতে আছে। হিমালয় সংলগ্ন গরিব, ধার্মিকভাবে রক্ষণশীল দেশ নেপালে এইডসের ঝুকি ছিল না আগে। কিন্তু ইদানীং সেখানে এইডসের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাব মতে দেশটিতে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তবে ইউএন এইডসের কর্মকর্তারা বলছেন, এ সংখ্যা ৭৫ হাজার। অবশ্য এ সংখ্যা অনেক বেশি। আগে বেশ কয়েকটি দেশের এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়েছিল সংস্থাটি। উদাহরণ হিসেবে, নেপালের পাশের দেশ ভারতে এইডস আক্রান্তের অফিশিয়াল সংখ্যা ৫৬ ভাগ কমিয়েছে তারা। সে হিসেবে তাদের মতে বর্তমানে ভারতে এইডস আক্রান্ত রোগী ২.৫ মিলিয়ন, যা সাউথ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়া ছাড়া অন্য সব দেশের চেয়ে বেশি।  এ গবেষণাটি পরিচালনার জন্য আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফিস থেকে এবং হার্ভার্ড ও বস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থ সাহায্য দেয়া হয়েছে। এ গবেষণার ক্ষেত্রে কাঠমন্ডুতে মাইতি নেপাল বা নেপালি মাদারস হোম নামের একটি চ্যারিটি সংস্থা ২৮৭ জন মেয়েকে পরীক্ষা করেছে। তাদের প্রায় সবাইকে ভারতে পতিতাবৃত্তি বিরোধী সংস্থাগুলো পুলিশের সহায়তায় নেপালে ফেরত পাঠিয়েছে। সিলভারম্যানের টিম যেসব নেপালি মেয়েকে পরীক্ষা করেছে তাদের ৩৮ শতাংশ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গেছে। তবে কম বয়সী যে ৩৩ জন মেয়েকে ১৫ বছর বয়সের আগেই পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার ছিল ৬১ শতাংশ। সিলভারম্যান জানিয়েছেন, কম বয়সী মেয়েদের জন্য পতিতালয়ের মালিকরা দ্বিগুণ অর্থ দেয় এবং তাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের জন্য বেশি অর্থ দাবি করে। অনেক সময় তাদের ভার্জিন (ঠরৎমরহ) বা কুমারী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। কারণ পুরুষরা অনেকে মনে করে কম বয়সী মেয়েদের যৌনরোগ কম থাকে। এছাড়া কয়েকটি দেশে একটি সাধারণ বিশ্বাস চালু আছে যে কুমারী মেয়ের সঙ্গে সহবাস করলে এইডস নিরাময় হয়। সিলভারম্যান বলেছেন, এটা সত্যি হৃদয় বিদারক। সেসব মেয়েদের অনেকে খুবই ছোট, বা¯Íবতা বোঝে না। ব্যাপারটি যে কোনো বাবা ও তার মেয়ের জন্য একটি দুঃস্বপ্ন। যেসব মেয়েকে পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের অর্ধেককেই ভারতে বাড়ির ঝি হিসেবে অথবা রেস্টুরেন্টে চাকরি দেয়ার লোভ দেখানো হয়েছিল। সেই মেয়েদের অনেককে আত্মীয়রা বেড়ানোর কথা বলে ও তীর্থস্থান ঘুরে বেড়াতে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভারতে এনে বিক্রি করে দিয়েছিল। অনেককে বিয়ের মিথ্যা আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল। সিলভারম্যানের মতে, তাদের অনেককে পাবলিক মার্কেট অথবা ট্রেন স্টেশন থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বয়স্ক মহিলারা চা ও সফট ড্রিংকসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়াতো তাদের। এতে তারা অজ্ঞান হয়ে পড়লে নিয়ে যাওয়া হতো তাদের। সাবেক ইউএন এইডস কর্মকর্তা মেনডোজা বলেছেন, সবাইকে এভাবে অপহরণ করা হয়নি। অভাবের কারণে অনেকে নিজ ইচ্ছাতেও পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। ভারতের সাবেক ন্যাশনাল আইন কার্যকর কর্মকর্তা রমেশ ভট্টাচার্য বলেছেন, এ নিষ্ঠুর ব্যবসা উপমহাদেশে গত ছয় দশকের বেশি সময় ধরে ছড়িয়ে পড়েছে। নেপালের উত্তরের অনেক এলাকায় যে কেউ বলতে পারে কোন বাড়ির মেয়ে ভারতের পতিতালয়ে কাজ করছে। যদি বাড়ির ছাদ টিনের হয় তবে সেটি পতিতালয়ের অর্থে তৈরি বলে মনে করা হয়। মেনডোজা জানিয়েছেন, ওইসব মেয়েদের তাদের পরিবার ও গ্রামের লোকেরা অনেক সময় এলাকায় ফিরে আসতে নিষেধ করে। কারণ তারা ভয় পায় যে ওই মেয়েরা অন্য মেয়েদের বিপথগামী করে ফেলতে পারে। এছাড়া গ্রামের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। যার ফলে এ গ্রামের কম বয়সী মেয়েদের কেউ বিয়ে করতে চাইবে না আর। আর এ কারণে অপহরণ হওয়া ও ধর্ষিতা ওইসব মেয়েরা বাধ্য হয়েই দেহ ব্যবসা চালিয়ে যায়। সিলভারম্যান বলেছেন, কাঠমন্ডুর পতিতাদের ওপর জরিপ চালিয়ে জানা গেছে, তাদের অর্ধেক সংখ্যক ভারতে কাজ করেছে। ওইসব পতিতাদের অনেকেই গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং তাদের সন্তানরা চিকিৎসার অভাবে রোগে আক্রান্ত হয়। গবেষণাটিতে জানা গেছে, বিশ্বের অন্যতম বড় শহর মুম্বাইয়ের পতিতালয় এইডসের জন্য খুব ঝুকিপূর্ণ। কম বয়সী ওইসব মেয়েদের বিভিন্ন পতিতালয়ে পালাক্রমে রাখা হয়। যার ফলে এইডসের ঝুকি আরো বেড়ে যায়। ভারতে যৌন কর্মীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। ট্রাক ড্রাইভাররা সাধারণত যৌন কর্মীদের বড় খদ্দের। যৌন কর্মী, পুরুষে পুরুষে সমকামী সম্পর্ক, ড্রাগ গ্রহণ, এসব দেশটির শিল্প উন্নত দক্ষিণ অঞ্চলে এবং পাকি¯Íান-মিয়ানমারের হেরোইন চোরাচালান সীমান্ত এলাকায় বেশি দেখা যায়। তবে নেপালের সীমান্তে ওইসব সমস্যা নেই।  আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের সূত্র মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় পাচ লাখ কম বয়সী মেয়েকে দেহ ব্যবসার জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাচার করা হয়। সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৫০ হাজার নারী পাচার হয় দক্ষিণ এশিয়ায় । আর তাদের বেশির ভাগ ভারতের বিভিন্ন শহরে পতিতা হিসেবে কাজ করে। দ্বিতীয় তথ্যটি জানিয়েছে আমেরিকার কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস। অপরদিকে এইডস মোকাবিলার সব চিত্র যে হতাশাজনক তা নয়। কিছু সুখবর আছে। ২০০৩ সালে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ‘থ্রি বাই ফাইভ’ নামক কর্মসূচি শুরু করে। এই কর্মসূচি বেশ সফলতার মুখ দেখছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একটি ওষুধ কোম্পানি এইডস্ প্রতিরোধে ওষুধ প্রাথমিকভাবে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটাও নিঃসন্দেহে এইডস আক্রান্ত রোগীদের জন্য সুখবর।  এ অবস্থায় ঘাতকব্যাধি এইডস থেকে বেঁচে থাকার জন্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সব পর্যায়ে সচেতনতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এইডস কিভাবে সংক্রমিত হয় এবং এর পরিণতি কতটা মারাত্মক সে সম্পর্কে শিক্ষার্থীদেরও সম্যক ধারণা লাভের সুযোগ করে দেয়া বাঞ্ছনীয়। ইনজেকশন দেয়া, রক্ত, সঞ্চালন, রক্ত গ্রহণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। মোট কথা এইডস মোকাবিলায় সার্বিক সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। 

0 comments:

Post a Comment