বিশ্ব পরিবার দিবস ঃ প্রেক্ষিত পরিবারতন্ত্র
ড.ফোরকান আলী
মানুষ একটি পরিবারের জম্মগ্রহন করে। সে পরিবার কোনে একটি গোত্র বা সম্প্রদায়ের মাঝে থাকে। প্রাচীনকালে সমাজ গঠনের আগে পরিবার প্রথা ছিলনা। মানুষ বনজঙ্গলে হিংস্র প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করতো। খাদ্যদ্রব্য ও আশ্রয়ের খোঁজে তাদেরকে একাই সব প্রতিকুল পরিবেশের সঙ্গে সব সময় লড়াই করে বাচতে হতো। জীবন ছিল ভয়ানক কষ্টের ও বিপজ্জনক। এ রকম দুঃখকষ্ট ও বিপদ-আপদের মাঝে একা একা বাস করা তাদের সম্ভব হচ্ছিলনা। খাবার যোগাড় করতে ও হিংস্র প্রাণীর আক্রমণ থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখতে মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বাস করার প্রয়োজন অনুভব করে। অর্থাৎ আত্মরার তাগিদেই আদিম মানুষ প্রথম দলবদ্ধ হয়ে বাস করতে শুরু করে। এভাবেই মানুষ সর্বপ্রথম পরিবার বা সমাজ গঠন শুরু করে। তবে সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার এবং পেজ’র মতে, “বিবাহ ভিত্তিক ুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পরিবার বা সন্তানাদির জম্মদান ও লালন-পালনের ল্েয পরিচালিত হয়। সমাজবিজ্ঞানী এফ,নিমকফ এর মতে,“পরিবার হচ্ছে স্বামী ও স্ত্রী কতৃক সৃষ্ট মোটামুটি স্থায়ী সংগঠন। যে খানে সন্তান সন্ততি থাকতে ও পারে না ওথাকতে পারে”। সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড পোপেন’র ভাষায় পরিবারের সংজ্ঞা হচ্ছে,“আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ”এমন একটি গোষ্ঠী যার সদস্যরা সমবেতভাবে বসবাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য উদ্দেশ্য অর্জনের ল্েয সহযোতিার কাজ করে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে পরিবারের সাথে গোষ্ঠী, গোত্র বা সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত হলেও সম্প্রতি বাংলাদেশে পরিবার শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। শব্দটি এর আগেও নেপথ্যে-নিভৃতে যে আলোচিত হয়নি তা নয়। রাজনৈতিক দলের দু’নেত্রীকে ঘিরেই এখন আরো স্পষ্টভাবে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পরিবারতন্ত্রের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সমগ্র জাতি আজ ভাবিত। এর পাশাপাশি অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পরিবারতন্ত্রের সমর্থনে নানা যুক্তি উপস্থাপিত করে চলেছেন। এরা পুরোন স্তাবকতার ভূমিকায় রয়ে গেছেন। দুই নেত্রীর হাত ধরে রাজনীতির সুযোগ-সুবিধার জন্য স্তাবকেরা তৎপর রয়েছেন আগের মতই। যদিও তাদের সংখ্যা কম। এমনও হতে পারে পরিস্থিতির কারণে কৌশলগত কারণে তারা মুক্তভাবে স্তাবকতায় ব্যস্ত। রাজনীতির বহুমাত্রিকতা অত্যন্ত দুরূহ সে কথাও এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার। বাংলাদেশ সমাজের আজকের দিনের দ্রুত গতিশীলতা পরিবারতন্ত্রকে বড় রকমের প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ঐতিহ্যের কারণে গণমানুষের রাজনৈতিক এফিকেসি বেড়েছে অনেক। যে কারণে পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্র আজ মুখোমুখি দ্বন্দ্বে এসে পৌঁছেছে। সমষ্টি নেতৃত্বের কথা ভাবছে লোকজন, মুক্ত নেতৃত্বের কথা ভাবছে। ভাবছে পরিবর্তমান ও প্রগতিশীল নেতৃত্বের কথা। সে কারণে এই দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বকে উষ্কে দিয়েছে আকাশ প্রমাণ দুর্নীতি ও অনিয়ম। চেতনা ও পরিপার্শ্ব সব মিলে এই দ্বন্দ্বের কার্যকারণ তৈরী হয়েছে। স্বৈরাচার যে জগদ্দল তৈরী করেছিল গত ষোল বছরের গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার সে রকম জগদ্দল তৈরী করেছে। এ জগদ্দলে আপোষের শেষ ফোঁটাটুকুও আর থাকেনি পরিবারঘেরা নেতাদের অনেকের। একদিকে গণজাগৃতি অন্যদিকে গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার তৈরী করেছে একটি সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিতি। পরিবারতন্ত্র উন্নয়নশীলতার একটি মাত্রা। যেখানে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কোন রাজনৈতিক পদ্ধতিকে নিশ্চিত করতে পারেনি সেখানেই পরিবারতন্ত্রের সম্ভাবনা দেখা দেয়। উন্নয়নশীলতা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে অনেক গণতান্ত্রিক অর্জন নিশ্চিত করলেও প্রয়োজনীয় পরিণত রাজনৈতিক পদ্ধতির অভাবের কারণে যে শূন্যতা রাজনৈতিক নেতৃত্বের েেত্র সূচিত হয় তারই প্রেেিত পরিবারতন্ত্র জায়গা করে নেয়। এতে করে ব্যক্তি ও পরিবারের হাতে মতার কেন্দ্রীভবন ঘটে। এর প্রেতি পার্থক্যে রাজতান্ত্রিক সম্ভাবনাও দেখা দেয়। বিশেষত যদি পরিবারতান্ত্রিক ব্যক্তি নেতৃত্বের ভিসানের অভাব থাকে তাহলে তা রাজতন্ত্রমুখি হবার দিকে এগোতে থাকে। এছাড়াও পরিবারতন্ত্রের থাকে আপেকি গণবিচ্ছিন্নতাও। যা তার উচ্চাভিলাষকে উষ্কে দেয় গণমানুষের মতার বিবেচনাকে পাশ কাটিয়ে। এমনকি গণআন্দোলনের ঐতিহ্যে নিজের ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও পরিবারতান্ত্রিক ব্যক্তিনেতৃত্ব সত্যিকার অর্থে গণশক্তির মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সফলতা যেন তারি নেতৃত্বের ফলশ্র“তি এ রকম অনুভবে তিনি জড়িত হন এবং অন্ধ আত্মমন্থনে ব্যাপৃত হন। তখন প্রশাসন সামগ্রে তার ছায়াপাত ঘটে। ঘটে রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড ও চরিত্রে। এরকম পরিস্থিতি বড় হয়ে উঠলে তার আনুষঙ্গিক পরিষদের মধ্যে নানা রকম প্রগতিশীল প্রশ্ন উঁকি দিলেও তা উচ্চারণে আসে না। অবস্থানের নিরাপত্তার কারণে কৌশলগত কারণে তারা নীরব থাকেন। সব মিলে একটি অবরুদ্ধ মতা পরিবেশ তৈরী হয়। যা শেষাবধি ব্যক্তিক স্বৈরাচারের আঙ্গিক নেয়। এরই প্রভাব পড়ে পুরো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক হয়েও ঐ অবরুদ্ধ কেন্দ্রীয় মতার দাপটের বা আধিপত্যের কারণে ঠিক ঠিক গণতান্ত্রিক থাকে না। তার গণতান্ত্রিক সচলতা আপেকি অর্থে বন্ধ্যা হয়ে যায়। রাজনীতিতে মতার গুরুত্ব থাকায় অন্ধ মতার আধিপত্য পুরো রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত ও অব্যবস্থিত করে। পরিবারতন্ত্র সাধারণতঃ আরোপিত এবং সে কারণে আপেকি অর্থে ভাসমান। রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেও অথবা মাঠ পর্যায়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দিলেও তার পে সত্যিকার অর্থে গণসম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা থাকে না। তিনি পরিবারতান্ত্রিক ছায়ার নিচে থেকে মাঠ পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মাঠ পর্যায়ে গণসম্পৃক্ত না হয়ে উপায় নেই। তাকে কাজ করতে হয় শূন্যতার নিচে সরাসরি মাঠে। তার গণসংযোগ হয় সরাসরি। তিনি গণজীবন ও গণঅনুভবকে বুঝতে পারেন। একজন যথার্থ গণনেতা স্তাবকঘেরা হলেও তার নিজস্ব প্রত্য অভিজ্ঞতার কারণে তিনি এদের বক্তব্যের ও আচরণের উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন এবং অভিজ্ঞতার কারণে তার অন্তর্দৃষ্টি ও দূরদৃষ্টি দিয়ে তার ল্যকে স্থির রাখতে পারেন গণস্বার্থের অনুকূলে। স্তাবকের ভাষা ও আচরণ তাকে প্রভাবিত করতে পারে না। তাদের আচরণ ও ভাষা অনুযায়ী তাদের পরিচালনা করবার পদ্ধতি তার জানা থাকে। যা তিনি অর্জন করেন গণসম্পৃক্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রত্য অভিজ্ঞতার কারণে। পান্তরে পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্বের পক্ষে এসব সম্ভব হয় না। ফলে তিনি একদিকে যেমন স্তাবকঘেরা থাকেন তেমনি স্তাবকনির্ভর থাকেন। তাই জনগণ এগিয়ে গেলেও তার সাথে তার এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তার মধ্যে প্রয়োজনীয় গণমুখিতার অভাব দেখা দেয় এবং এক ধরনের আত্মকেন্দ্রিক মতাবোধ তার ভেতরে ভিসন সৃষ্টির পথে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে অর্জিত নতুন মূল্যবোধ সেই মূল্যবোধের মান সম্পর্কে তিনি অবহিত থাকেন না। বরং আত্মকেন্দ্রিক মতাবোধের কারণে তিনি আরো বেশি বেশি পরিবারতান্ত্রিক হয়ে ওঠেন। শুধু তাই নয় তার স্তাবকের মধ্যে যারা সুচতুর তারা তার সঙ্গে সম্পর্কের শক্তিটুকু নিজেদের বিচিত্র স্বার্থ হাসিলের জন্যে ব্যবহার করেন। এবং এভাবে এমন একটি পর্যায়ে আসে কোন কোন স্তাবক নিজ চাতুর্যের কারণে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নীতিহীন ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ওঠেন। এমন কি এইসব নীতিহীন ও দুর্নীতিগ্রস্থ লোকজন দলের ইস্তাহারে বর্ণিত অঙ্গীকারগুলোর বিরুদ্ধে সফলভাবে অবস্থান নেন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অপরিসীম। বস্তুত রাজনৈতিক দলই গণতান্ত্রিক এগিয়ে নেবার হাতিয়ার। রাজনৈতিক দল বিরাজ করে সমাজ ও সরকারের মাঝখানে। সমাজের অনানুষ্ঠানিক শক্তিকে সরকারী শক্তিতে পরিণত করবার প্রক্রিয়ায় এটি কাজ করে। সেইজন্যে সামাজিক শক্তির বিন্যস্তকরণের দায় রাজনৈতিক দলের। রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক না হলে সমাজ ও সরকারের এই সম্পর্ক গণতান্ত্রিক হতে পারে না। পরিবারতন্ত্র রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠার বিষয়ে একটি বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করে। রাজনৈতিক দলে পরিবারতন্ত্র এক ধরনের স্থবির ও অবিচল অবস্থান গ্রহণ করে। এ েেত্র একই ব্যক্তি যুগ যুগ ধরে দলীয় সভাপতির পদ দখল করে থাকেন। পরিবারতন্ত্রের পারিষদঘেরা পরিবেশে সভাপতিকে বা তার কোন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবার কেউ থাকে না। ফলে রাজনৈতিক দলের সব সিদ্ধান্ত নেবার এখতিয়ার একন্তভাবে তার হয়ে ওঠে। স্তাবকেরা যৌথ সিদ্ধান্তের সুযোগ সভার ভেতরেই পন্ড করে দেয়। তারা প্রায় সবসময় দলের সভাপতিকেই সব সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার দিয়ে দেয়। ফল দাঁড়ায় পরিবারতন্ত্রের আরো জোরালোকরণ। পাশাপাশি রাজনৈতিক দল তার গণতান্ত্রিক চরিত্র হারায়। রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে গণতান্ত্রিক অভিলাষ দল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিকশিত হবে তা হতে পারে না। কারণ সে রকম নেতৃত্ব নেবার স্বাভাবিক প্রস্তুতি নেবার পরিবেশ থাকে না। ফলে সম্ভাবনাময় নতুন নেতৃত্ব অনাদৃতি ও অবহেলিতই থাকে। বরং কখনও সেই পরিবেশে নেতৃত্বের সম্ভাবনাময় ব্যক্তিবর্গকে অমতায়িত করবার আয়োজন হয়।
রাজনীতি বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মখদুম মাশরাফী’র মতে, গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিকাশের পথ হচ্ছে মাঠ পর্যায় থেকে নেতৃত্ব বিষয়ক সক্রিয় অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। যা রাজনৈতিক দলের ভেতর দিয়ে প্রক্রিয়া হিসেবে চলমান থাকে। ইউনিয়ন কাউন্সিল, থানা কাউন্সিল, জেলা পরিষদ, ইত্যাদি স্তরের নেতৃত্বকে আগে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করতে হবে। এর ফলে তার পে বিভিন্ন স্তরের জনগণকে তার বুঝবার সুযোগ হবে। তাদের চাওয়া পাওয়া চাল চরিত্র দাবী দাওয়ার যথার্থতা ও প্রকৃতি জানা নেতৃত্বের জন্যে খুবই প্রয়োজনীয়। এই অভিজ্ঞতা তাকে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা পালনের এবং সরকারে গেলে নীতি নিরূপণের যোগ্যতা দেবে। এেেত্র তার অভিজ্ঞান ও আত্মবিশ্বাস উভয়েই গভীর হয়ে উঠবে। তিনি হয়ে উঠবেন সত্যিকার গণনেতা বা গণতান্ত্রিক নেতা। পরিবারতন্ত্র এই সম্ভাবনাকে নাশ করে। পরিবারতন্ত্রের প্রভাবের কারণে বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে অনেক বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় যুবক অথবা ব্যক্তি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে নানাভাবে সম্পর্কচর্চা করে এবং এইভাবে তারা নিজেদের স্বার্থ হাছিল করে। এমনকি তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করে অবাধে। স্থানীয় থানা পুলিশকেও তারা নিয়ন্ত্রণ করে। স্থানীয় দলীয় কমিটিগুলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অপারগ থাকে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে এক ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করে যা সাধারণ মানুষের জন্যে অস্বস্তিকর। শুধু তাই নয়, স্থানীয় সাংসদ এই সব অনানুষ্ঠানিক শক্তিগুলোকে কাজে লাগায় তাদের প্রভাবের পে যা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলে। অনেক সময় এমনও হয়ে থাকে একজন সাংসদ প্রধানতঃ এদেরই প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন গণমানুষের মূল স্রোত ধারার বাইরে। এ কারণে প্রয়োজন স্তরে স্তরে মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব বিকাশের। দলের সভাপতি কেউ জীবনে দুবারের বেশি হতে পারবে না এটি একটি শর্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন দলের গঠনতন্ত্রকে যৌথ নেতৃত্বের উপযোগী করা এবং নেতৃত্বের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। নিছক নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে কাউকে দূরে ঠেলে দিলে এর সমাধান হবে না। এখানে প্রয়োজন শর্তায়ন পদ্ধতি। শর্তায়ন পদ্ধতি এেেত্র হচ্ছে এ শর্ত যে দলের সভাপতি জীবনে কেউ দুবারের বেশি হতে পারবে না। তা হলে দুবারের বেশি একজন প্রধানমন্ত্রীও হতে পারবে না। এই শর্তেই আজকের পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্রের দ্বন্দ্বের নিরসন সম্ভব। আমরা আশাকরি এবারের বিশ্ব পরিবার দিবসে পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্রের দ্বন্দ্বের চির অবসান হউক।
ড.ফোরকান আলী
মানুষ একটি পরিবারের জম্মগ্রহন করে। সে পরিবার কোনে একটি গোত্র বা সম্প্রদায়ের মাঝে থাকে। প্রাচীনকালে সমাজ গঠনের আগে পরিবার প্রথা ছিলনা। মানুষ বনজঙ্গলে হিংস্র প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করতো। খাদ্যদ্রব্য ও আশ্রয়ের খোঁজে তাদেরকে একাই সব প্রতিকুল পরিবেশের সঙ্গে সব সময় লড়াই করে বাচতে হতো। জীবন ছিল ভয়ানক কষ্টের ও বিপজ্জনক। এ রকম দুঃখকষ্ট ও বিপদ-আপদের মাঝে একা একা বাস করা তাদের সম্ভব হচ্ছিলনা। খাবার যোগাড় করতে ও হিংস্র প্রাণীর আক্রমণ থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখতে মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বাস করার প্রয়োজন অনুভব করে। অর্থাৎ আত্মরার তাগিদেই আদিম মানুষ প্রথম দলবদ্ধ হয়ে বাস করতে শুরু করে। এভাবেই মানুষ সর্বপ্রথম পরিবার বা সমাজ গঠন শুরু করে। তবে সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার এবং পেজ’র মতে, “বিবাহ ভিত্তিক ুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পরিবার বা সন্তানাদির জম্মদান ও লালন-পালনের ল্েয পরিচালিত হয়। সমাজবিজ্ঞানী এফ,নিমকফ এর মতে,“পরিবার হচ্ছে স্বামী ও স্ত্রী কতৃক সৃষ্ট মোটামুটি স্থায়ী সংগঠন। যে খানে সন্তান সন্ততি থাকতে ও পারে না ওথাকতে পারে”। সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড পোপেন’র ভাষায় পরিবারের সংজ্ঞা হচ্ছে,“আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ”এমন একটি গোষ্ঠী যার সদস্যরা সমবেতভাবে বসবাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য উদ্দেশ্য অর্জনের ল্েয সহযোতিার কাজ করে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে পরিবারের সাথে গোষ্ঠী, গোত্র বা সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত হলেও সম্প্রতি বাংলাদেশে পরিবার শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। শব্দটি এর আগেও নেপথ্যে-নিভৃতে যে আলোচিত হয়নি তা নয়। রাজনৈতিক দলের দু’নেত্রীকে ঘিরেই এখন আরো স্পষ্টভাবে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পরিবারতন্ত্রের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সমগ্র জাতি আজ ভাবিত। এর পাশাপাশি অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পরিবারতন্ত্রের সমর্থনে নানা যুক্তি উপস্থাপিত করে চলেছেন। এরা পুরোন স্তাবকতার ভূমিকায় রয়ে গেছেন। দুই নেত্রীর হাত ধরে রাজনীতির সুযোগ-সুবিধার জন্য স্তাবকেরা তৎপর রয়েছেন আগের মতই। যদিও তাদের সংখ্যা কম। এমনও হতে পারে পরিস্থিতির কারণে কৌশলগত কারণে তারা মুক্তভাবে স্তাবকতায় ব্যস্ত। রাজনীতির বহুমাত্রিকতা অত্যন্ত দুরূহ সে কথাও এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার। বাংলাদেশ সমাজের আজকের দিনের দ্রুত গতিশীলতা পরিবারতন্ত্রকে বড় রকমের প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ঐতিহ্যের কারণে গণমানুষের রাজনৈতিক এফিকেসি বেড়েছে অনেক। যে কারণে পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্র আজ মুখোমুখি দ্বন্দ্বে এসে পৌঁছেছে। সমষ্টি নেতৃত্বের কথা ভাবছে লোকজন, মুক্ত নেতৃত্বের কথা ভাবছে। ভাবছে পরিবর্তমান ও প্রগতিশীল নেতৃত্বের কথা। সে কারণে এই দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বকে উষ্কে দিয়েছে আকাশ প্রমাণ দুর্নীতি ও অনিয়ম। চেতনা ও পরিপার্শ্ব সব মিলে এই দ্বন্দ্বের কার্যকারণ তৈরী হয়েছে। স্বৈরাচার যে জগদ্দল তৈরী করেছিল গত ষোল বছরের গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার সে রকম জগদ্দল তৈরী করেছে। এ জগদ্দলে আপোষের শেষ ফোঁটাটুকুও আর থাকেনি পরিবারঘেরা নেতাদের অনেকের। একদিকে গণজাগৃতি অন্যদিকে গণতান্ত্রিক স্বৈরাচার তৈরী করেছে একটি সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিতি। পরিবারতন্ত্র উন্নয়নশীলতার একটি মাত্রা। যেখানে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কোন রাজনৈতিক পদ্ধতিকে নিশ্চিত করতে পারেনি সেখানেই পরিবারতন্ত্রের সম্ভাবনা দেখা দেয়। উন্নয়নশীলতা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে অনেক গণতান্ত্রিক অর্জন নিশ্চিত করলেও প্রয়োজনীয় পরিণত রাজনৈতিক পদ্ধতির অভাবের কারণে যে শূন্যতা রাজনৈতিক নেতৃত্বের েেত্র সূচিত হয় তারই প্রেেিত পরিবারতন্ত্র জায়গা করে নেয়। এতে করে ব্যক্তি ও পরিবারের হাতে মতার কেন্দ্রীভবন ঘটে। এর প্রেতি পার্থক্যে রাজতান্ত্রিক সম্ভাবনাও দেখা দেয়। বিশেষত যদি পরিবারতান্ত্রিক ব্যক্তি নেতৃত্বের ভিসানের অভাব থাকে তাহলে তা রাজতন্ত্রমুখি হবার দিকে এগোতে থাকে। এছাড়াও পরিবারতন্ত্রের থাকে আপেকি গণবিচ্ছিন্নতাও। যা তার উচ্চাভিলাষকে উষ্কে দেয় গণমানুষের মতার বিবেচনাকে পাশ কাটিয়ে। এমনকি গণআন্দোলনের ঐতিহ্যে নিজের ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও পরিবারতান্ত্রিক ব্যক্তিনেতৃত্ব সত্যিকার অর্থে গণশক্তির মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সফলতা যেন তারি নেতৃত্বের ফলশ্র“তি এ রকম অনুভবে তিনি জড়িত হন এবং অন্ধ আত্মমন্থনে ব্যাপৃত হন। তখন প্রশাসন সামগ্রে তার ছায়াপাত ঘটে। ঘটে রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড ও চরিত্রে। এরকম পরিস্থিতি বড় হয়ে উঠলে তার আনুষঙ্গিক পরিষদের মধ্যে নানা রকম প্রগতিশীল প্রশ্ন উঁকি দিলেও তা উচ্চারণে আসে না। অবস্থানের নিরাপত্তার কারণে কৌশলগত কারণে তারা নীরব থাকেন। সব মিলে একটি অবরুদ্ধ মতা পরিবেশ তৈরী হয়। যা শেষাবধি ব্যক্তিক স্বৈরাচারের আঙ্গিক নেয়। এরই প্রভাব পড়ে পুরো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক হয়েও ঐ অবরুদ্ধ কেন্দ্রীয় মতার দাপটের বা আধিপত্যের কারণে ঠিক ঠিক গণতান্ত্রিক থাকে না। তার গণতান্ত্রিক সচলতা আপেকি অর্থে বন্ধ্যা হয়ে যায়। রাজনীতিতে মতার গুরুত্ব থাকায় অন্ধ মতার আধিপত্য পুরো রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত ও অব্যবস্থিত করে। পরিবারতন্ত্র সাধারণতঃ আরোপিত এবং সে কারণে আপেকি অর্থে ভাসমান। রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেও অথবা মাঠ পর্যায়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দিলেও তার পে সত্যিকার অর্থে গণসম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা থাকে না। তিনি পরিবারতান্ত্রিক ছায়ার নিচে থেকে মাঠ পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মাঠ পর্যায়ে গণসম্পৃক্ত না হয়ে উপায় নেই। তাকে কাজ করতে হয় শূন্যতার নিচে সরাসরি মাঠে। তার গণসংযোগ হয় সরাসরি। তিনি গণজীবন ও গণঅনুভবকে বুঝতে পারেন। একজন যথার্থ গণনেতা স্তাবকঘেরা হলেও তার নিজস্ব প্রত্য অভিজ্ঞতার কারণে তিনি এদের বক্তব্যের ও আচরণের উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন এবং অভিজ্ঞতার কারণে তার অন্তর্দৃষ্টি ও দূরদৃষ্টি দিয়ে তার ল্যকে স্থির রাখতে পারেন গণস্বার্থের অনুকূলে। স্তাবকের ভাষা ও আচরণ তাকে প্রভাবিত করতে পারে না। তাদের আচরণ ও ভাষা অনুযায়ী তাদের পরিচালনা করবার পদ্ধতি তার জানা থাকে। যা তিনি অর্জন করেন গণসম্পৃক্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রত্য অভিজ্ঞতার কারণে। পান্তরে পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্বের পক্ষে এসব সম্ভব হয় না। ফলে তিনি একদিকে যেমন স্তাবকঘেরা থাকেন তেমনি স্তাবকনির্ভর থাকেন। তাই জনগণ এগিয়ে গেলেও তার সাথে তার এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তার মধ্যে প্রয়োজনীয় গণমুখিতার অভাব দেখা দেয় এবং এক ধরনের আত্মকেন্দ্রিক মতাবোধ তার ভেতরে ভিসন সৃষ্টির পথে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে অর্জিত নতুন মূল্যবোধ সেই মূল্যবোধের মান সম্পর্কে তিনি অবহিত থাকেন না। বরং আত্মকেন্দ্রিক মতাবোধের কারণে তিনি আরো বেশি বেশি পরিবারতান্ত্রিক হয়ে ওঠেন। শুধু তাই নয় তার স্তাবকের মধ্যে যারা সুচতুর তারা তার সঙ্গে সম্পর্কের শক্তিটুকু নিজেদের বিচিত্র স্বার্থ হাসিলের জন্যে ব্যবহার করেন। এবং এভাবে এমন একটি পর্যায়ে আসে কোন কোন স্তাবক নিজ চাতুর্যের কারণে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নীতিহীন ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ওঠেন। এমন কি এইসব নীতিহীন ও দুর্নীতিগ্রস্থ লোকজন দলের ইস্তাহারে বর্ণিত অঙ্গীকারগুলোর বিরুদ্ধে সফলভাবে অবস্থান নেন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অপরিসীম। বস্তুত রাজনৈতিক দলই গণতান্ত্রিক এগিয়ে নেবার হাতিয়ার। রাজনৈতিক দল বিরাজ করে সমাজ ও সরকারের মাঝখানে। সমাজের অনানুষ্ঠানিক শক্তিকে সরকারী শক্তিতে পরিণত করবার প্রক্রিয়ায় এটি কাজ করে। সেইজন্যে সামাজিক শক্তির বিন্যস্তকরণের দায় রাজনৈতিক দলের। রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক না হলে সমাজ ও সরকারের এই সম্পর্ক গণতান্ত্রিক হতে পারে না। পরিবারতন্ত্র রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠার বিষয়ে একটি বিরাট বাধা হিসেবে কাজ করে। রাজনৈতিক দলে পরিবারতন্ত্র এক ধরনের স্থবির ও অবিচল অবস্থান গ্রহণ করে। এ েেত্র একই ব্যক্তি যুগ যুগ ধরে দলীয় সভাপতির পদ দখল করে থাকেন। পরিবারতন্ত্রের পারিষদঘেরা পরিবেশে সভাপতিকে বা তার কোন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবার কেউ থাকে না। ফলে রাজনৈতিক দলের সব সিদ্ধান্ত নেবার এখতিয়ার একন্তভাবে তার হয়ে ওঠে। স্তাবকেরা যৌথ সিদ্ধান্তের সুযোগ সভার ভেতরেই পন্ড করে দেয়। তারা প্রায় সবসময় দলের সভাপতিকেই সব সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার দিয়ে দেয়। ফল দাঁড়ায় পরিবারতন্ত্রের আরো জোরালোকরণ। পাশাপাশি রাজনৈতিক দল তার গণতান্ত্রিক চরিত্র হারায়। রাজনৈতিক নেতৃত্বের যে গণতান্ত্রিক অভিলাষ দল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিকশিত হবে তা হতে পারে না। কারণ সে রকম নেতৃত্ব নেবার স্বাভাবিক প্রস্তুতি নেবার পরিবেশ থাকে না। ফলে সম্ভাবনাময় নতুন নেতৃত্ব অনাদৃতি ও অবহেলিতই থাকে। বরং কখনও সেই পরিবেশে নেতৃত্বের সম্ভাবনাময় ব্যক্তিবর্গকে অমতায়িত করবার আয়োজন হয়।
রাজনীতি বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মখদুম মাশরাফী’র মতে, গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিকাশের পথ হচ্ছে মাঠ পর্যায় থেকে নেতৃত্ব বিষয়ক সক্রিয় অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। যা রাজনৈতিক দলের ভেতর দিয়ে প্রক্রিয়া হিসেবে চলমান থাকে। ইউনিয়ন কাউন্সিল, থানা কাউন্সিল, জেলা পরিষদ, ইত্যাদি স্তরের নেতৃত্বকে আগে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করতে হবে। এর ফলে তার পে বিভিন্ন স্তরের জনগণকে তার বুঝবার সুযোগ হবে। তাদের চাওয়া পাওয়া চাল চরিত্র দাবী দাওয়ার যথার্থতা ও প্রকৃতি জানা নেতৃত্বের জন্যে খুবই প্রয়োজনীয়। এই অভিজ্ঞতা তাকে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা পালনের এবং সরকারে গেলে নীতি নিরূপণের যোগ্যতা দেবে। এেেত্র তার অভিজ্ঞান ও আত্মবিশ্বাস উভয়েই গভীর হয়ে উঠবে। তিনি হয়ে উঠবেন সত্যিকার গণনেতা বা গণতান্ত্রিক নেতা। পরিবারতন্ত্র এই সম্ভাবনাকে নাশ করে। পরিবারতন্ত্রের প্রভাবের কারণে বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে অনেক বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় যুবক অথবা ব্যক্তি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে নানাভাবে সম্পর্কচর্চা করে এবং এইভাবে তারা নিজেদের স্বার্থ হাছিল করে। এমনকি তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করে অবাধে। স্থানীয় থানা পুলিশকেও তারা নিয়ন্ত্রণ করে। স্থানীয় দলীয় কমিটিগুলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অপারগ থাকে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে এক ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করে যা সাধারণ মানুষের জন্যে অস্বস্তিকর। শুধু তাই নয়, স্থানীয় সাংসদ এই সব অনানুষ্ঠানিক শক্তিগুলোকে কাজে লাগায় তাদের প্রভাবের পে যা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলে। অনেক সময় এমনও হয়ে থাকে একজন সাংসদ প্রধানতঃ এদেরই প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন গণমানুষের মূল স্রোত ধারার বাইরে। এ কারণে প্রয়োজন স্তরে স্তরে মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব বিকাশের। দলের সভাপতি কেউ জীবনে দুবারের বেশি হতে পারবে না এটি একটি শর্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন দলের গঠনতন্ত্রকে যৌথ নেতৃত্বের উপযোগী করা এবং নেতৃত্বের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। নিছক নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে কাউকে দূরে ঠেলে দিলে এর সমাধান হবে না। এখানে প্রয়োজন শর্তায়ন পদ্ধতি। শর্তায়ন পদ্ধতি এেেত্র হচ্ছে এ শর্ত যে দলের সভাপতি জীবনে কেউ দুবারের বেশি হতে পারবে না। তা হলে দুবারের বেশি একজন প্রধানমন্ত্রীও হতে পারবে না। এই শর্তেই আজকের পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্রের দ্বন্দ্বের নিরসন সম্ভব। আমরা আশাকরি এবারের বিশ্ব পরিবার দিবসে পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্রের দ্বন্দ্বের চির অবসান হউক।
†jLK: W.†dviKvb Avjx
M‡elK I mv‡eK Aa¨¶
36 MMbevey †ivo,Lyjbv
01711579267
Email- dr.fourkanali@gmail.com
0 comments:
Post a Comment