খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ছেঃ ঝুঁকির মুখে দুর্গত মানুষ
ড.ফোরকান আলী
বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। কোন কারণ ছাড়াই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশীয় বাজারে। দাম বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। সরকার খোলাবাজারে চাল বিক্রি ও বিদেশ থেকে আমদানিসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। তারপরও দাম বাড়ছে। ডাল, চিনির েেত্রও একই অবস্থা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছে বিশ্ব মন্দার প্রভাবে চলতি বছরও কৃষি ও জ্বালানি খাত অস্থির থাকতে পারে। ফোরাম তাদের ‘গ্লোবাল রিস্ক ২০১০’ এর প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্ব মন্দার প্রভাব সবচেয়ে বেশী পড়েছে কৃষি ও জ্বালানি খাতে। চলতি বছরও এ খাতগুলোতে স্থিতাবস্থা ধরে রাখা কঠিন হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাও ( এফএও) পূর্বাভাস দিয়েছে। চাল ও চিনির মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে এবং তা ২০০৮ সালের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। আর্ন্তজাতিক বাজারে পণ্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়ার আশংকা রয়েছে। এতে করে আমদানি খরচও বাড়বে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এখনো মূল্যস্ফীতি আশংকাজনক পর্যায়ে রয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অক্টোবর ০৯ সময়ে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছিল ৬ দশমিক ৭১ শতাংশে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। কারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে তা সামষ্টিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। সাধারণত আন্তর্জাতিক বাজারে জানুয়ারী- ফেব্র“য়ারীতে খাদ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি উল্টো। গত দু’মাসে কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোতেই খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত জানুয়ারীতে ভারতে বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮১ ভাগ। চীনে বেড়েছে ১৩ ভাগ। আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদার অধিকাংশই আমদানি করে থাকে চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। ইতোমধ্যে এই দেশগুলোতে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ভারত ইতিমধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। প্রভাব পড়ছে দেশে বর্তমানে দেশে চালের কোন সংকট না থাকলেও দাম বাড়ছে। বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম। তাই চলতি উৎপাদন মৌসুমের মজুদ মূল্যায়ন না করলে আবারও খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে এবং দাম বৃদ্ধি প্রবণতা লাগামহীন হতে পারে। নতুন করে সুযোগ নিতে পারে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। জিনিসপত্রের দাম সহনীয় রাখা এবং উচ্চ টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ল্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সহযোগী মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। অপরদিকে ভারতীয় বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আরো উদ্বেগ জনক। গত ডিসেম্বর মাসে দেশে শিল্প বৃদ্ধির হার বেডে যাওয়ায় দেশবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে ভাবছেন, দেশীয় অর্থনীতিতে দুঃখের দিন ঘুচল। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি দেশজোড়া সমীা ‘ইন্ডিয়ান ইকনমিক আউটলুক’ জানাচ্ছে, এত আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই, বিশ্ব বাণিজ্যের মন্দা কাটার প্রচার আসলে ভাঁওতা। যে কোনো সময়েই দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসতে পারে সেই মন্দা। আর তাতে ভারতও একটা বড় ধাক্কা খাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর মাসে দেশে শিল্প বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৬.৮ শতাংশ। আর এই সাফল্যের বেশির ভাগটাই জুড়ে আছে উৎপাদন শিল্প। চলতি আর্থিক বছরের পর পর তিনটি ত্রৈমাসিকে মোটের উপর শিল্পের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশের কাছাকাছি। সব মিলিয়ে গত এক বছরের নিরিখে দেশের সর্বত্রই আর্থিক ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ স্পষ্ট। কিন্তু গোল বেধেছে অন্য জায়গায়। দেশের আর্থিক বৃদ্ধি নির্ভর করে কৃষির উপরেও। আর এবার তাতেই ডাহা ফেল আমাদের দেশ। সবাইকে চিন্তায় রেখে দেশে কৃষির উৎপাদন শূন্যেরও নীচে নেমে গিয়েছে। লাফিয়ে বেড়েছে খাদ্যদ্রব্যের দাম, চড়েছে মুদ্রাস্ফীতির পারদও। কৃষির উৎপাদন কম, তাই কৃষকের হাতে টাকাও কম। গ্রামীণ অর্থনীতিও সংকটের মুখে। বাস্তবের এমন এক কঠিন সময়ের মধ্যেই আরেকটি দুশ্চিন্তা নতুন করে ভাঁজ ফেলেছে ওয়াকিবহাল মহলে। তা হলো, দেশের সব শিল্প গুলোও অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। প্রায় সব শিল্পের সঙ্গেই এদের যোগ থাকায়, শিল্পজাত দ্রব্যের দাম বাড়ার আশংকায় ভুগছেন অনেকেই। ফলে একটা বিষয় স্পষ্ট, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ভালো হলেও, বাস্তব অবস্থা কিন্তু ততটা ভালো নয়। কর্পোরেট সংস্থার সর্বময় কর্তা, ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মতো ২৫০ পদাধিকারীর বক্তব্যের উপর তৈরি হওয়া এই সমীাটি জানাচ্ছে, ১৮৫ জন বলছেন, আমেরিকা ও ইউরোপের মতো উচ্চবিত্ত দেশগুলির মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো আসলে সত্যি কথা নয়। যেকোনো সময়ে দ্বিগুণ আকারে এই মন্দা ফিরে আসতে পারে। তাদের এই মনোভাবের মূল সূত্র হল, আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে আমেরিকা যে পরিমাণ আর্থিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করেছিল, শেষে তা ১.৩ শতাংশ কম হয়েছে। যে দেশের বার্ষিক আর্থিক বৃদ্ধি ৫.৬২ শতাংশ আশা করা হচ্ছে, সেখানে এই হিসাবটি অত্যন্ত হতাশাজনক। অন্যদিকে জাপানের মতো ধনী দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গণনায় আগের থেকে এখনকার ফারাক ৩.৬ শতাংশ। এই দেশ গত বছরের গভীর আর্থিক মন্দা কাটিয়ে সবে ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধির আশায় বুক বাঁধছে। সেইখানে এই হিসাবও অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। ভারতের শিল্প বৃদ্ধি মানেই বেশি রপ্তানি। এমন অবস্থায় সারা পৃথিবীতে আর্থিক ধস নামলে ভারতও তার হাত থেকে রেহাই পাবে না। এছাড়া পাকিস্তানে ও ভয়াবহ বন্যায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দুর্গত মানুষের জীবন। জাতিসংঘের এক ত্রাণ সংস্থা সম্প্রতি এ কথা জানায়। এ পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট’র জন্য এক নতুন সঙ্কট তৈরি করেছে। কারণ দেশটিতে বেসামরিক সরকারের দুর্যোগ মোকাবেলার অতীত ইতিহাস হতাশাজনক। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওএফপি) মুখপাত্র আমজাদ জামিল জানিয়েছেন, সংস্থাটির কর্মীরা খাদ্য সরবরাহ হতে বিচ্ছিন্ন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকায় জরুরিভিত্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বন্যায় ৩০ লাখ মানুষ তিগ্রস্ত হয়েছে বলে জাতিসংঘের একটি সাহায্য সংস্থা ইতিপূর্বে জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে তালেবান জঙ্গিদের যুদ্ধের কারণে বন্যা আঘাত হানার আগেই পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষ তাদের বসতবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। সেখানকার মানুষের খাদ্য মজুদ শেষ হয়ে গেছে। বাজারগুলো খোলা নেই, দোকান-পাট ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ চরম খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে। এদিকে নেপালেও চরম খাদ্য সঙ্কট চলছে। শিগগিরই সেখানে খাদ্য সরবরাহ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। নেপালের পল্লী অঞ্চলের গ্রামবাসীদেরকে খাবার জোগাড়ের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে প্রতিদিন। দেড়দিন পায়ে হেঁটে খাদ্য সরবরাহের জায়গাগুলোতে পৌঁছে খাবার সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদেরকে। প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাবে আর্ন্তজাতিক ত্রাণ সরবরাহ গত মাসে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, দাতারা তহবিলের ব্যবস্থা করলে তারা আবার খাদ্য সরবরাহ শুরু করবে। বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধি রিচার্ড রগন বলেছেন, হাইতির ভূমিকম্পের মতো কোনো বিপর্যয়ের কারণে নেপালে এ সঙ্কট তৈরি হয়নি। বরং ২০-৩০ বছর ধরে দাতারা এবং নেপাল সরকার খাবারের অপ্রতুলতা এবং খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা তুলে না ধরায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নেপালে ১০ বছরের অভ্যন্তরীণ সংঘাত। সংঘাতের কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। অপরদিকে পশ্চিম আফ্রিকায় খাধ্য সংকট মোকাবিলায় ত্রাণ সংস্থাগুলো ১ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ডের (২ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ১ কোটি ৭০ লাখ ইউরো) আবেদন জানিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, তা না হলে এক অভাবনীয় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অক্সফাম এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, ঐ অঞ্চলে দীর্ঘ খরায় ফলহানির দরুন ১ কোটিরও বেশি লোক গুরুতর খাদ্য সংকট ও অপুষ্টিতে ভুগছে। ত্রাণ সংস্থা দু’টি পরিস্থিতি সামলাতে প্রত্যেককে ৭০ লাখ পাউন্ড করে চেয়েছে। অক্সফাম ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, নাইজারের খাদ্য পরিস্থিতি সবচাইতে শোচনীয়। দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি ৭০ লাখ লোক মারাত্মক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। সংস্থাটি বলেছে, নাইজেরিয়ারী বেশির ভাগ অঞ্চল খাদ্য সংকটের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, দীর্ঘ খরায় নাইজারে পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, নাইজার ও শাদের মানুষ পশুর মত জীবন কাটাচ্ছে। মেয়েদের অবস্থা আরো শোচনীয়। পশ্চিম আফ্রিকায় কর্মরত অক্সফামের আঞ্চলিক প্রধান মাসুদ বিটে বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঐ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় এড়ানো যাবে না। ফসল ওঠার মওসুম আসতে আরো সময় লাগবে। মানুষ সেখানে খাদ্য-কুখাদ্য খাচ্ছে, পান করছে বহুকষ্টে জোগাড় করা নোংরা পানি। অর্থ সংগ্রহ করতে না পারলে বহু লোককে বাঁচানো যাবে না। এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তাদের এখনই খাদ্য তিতে না পারলে গুরুতর পরিস্থিরি সৃষ্টি হবে। তবে আমাদেও দেশে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের আমদানি করে মজুদ বাড়াতে হবে। এ জন্য টিসিবিকে কার্যকর করতে হবে। ঢেলে সাজাতে হবে এই প্রতিষ্ঠানকে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। এছাড়া বাজারকে সবসময় তদারকির মধ্যে রাখতে হবে। আমাদের মতে, সরকার যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে তা বিনিয়োগবান্ধব। এটা কাজে লাগাতে হবে। দেশে যেন বিনিয়োগ বাড়ে তার উদ্যোগ নিতে হবে। যখন সংকট তখন উদ্যোগ না নিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা মতো কাজ করে সংকট মোকাবেলা করতে হবে। দু:খজনক হলেও সত্য যে, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চলতি আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান চাল ক্রয় অভিযান উত্তরাঞ্চলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মধ্যে ১৪ জেলার খাদ্য গুদামে এক ছটাক ধানও কেনা হয়নি। ১৬ জেলায় এবার ধান কেনার ল্যমাত্রা ৫৪ হাজার ২৮৬ টন ধরা হলেও কেনা হয়েছে মাত্র দেড় টন। একই ভাবে এক লাখ ২৬ হাজার ১৯৭ টন চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা থাকলেও তার বিপরীতে কেনা হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৬৫৫ টন। কারন, বাজার দরের চেয়ে সরকারি মূল্য অনেক কম হওয়ায় কৃষকরা এবার গুদামে ধান বিক্রি করেনি। রাজশাহী বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ জানায়, এবার রাজশাহী জেলায় ২ হাজার ৫৭৫ টন ধান কেনার ল্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৪২০ টন। একইভাবে রংপুরে ৪ হাজার ৫৭৯ টনের বিপরীতে অর্জিত হয়েছে এক দশমিক ৫ টন। বিভাগের এই দুই জেলা ছাড়া আর কোন জেলায় ধান সংগ্রহ হয়নি। এদিকে রাজশাহী বিভাগে সরকারি পর্যায়ে চাল সংগ্রহের কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের তথ্য মতে বিভাগের ১৬ জেলায় চাল সংগ্রহে এক হাজার ৮ ৬১টি মিলের সাথে চুক্তি হলেও মিলাররা এখনো চাল পুরোপুরি গুদামে দেয়নি। আশাকরি সরকার খাদ্য মওজুদ ও নিত্যপণ্য আমদানির ব্যাপারে সর্তক ভূমিকা গ্রহণ করবেন।
ড.ফোরকান আলী
বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। কোন কারণ ছাড়াই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশীয় বাজারে। দাম বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। সরকার খোলাবাজারে চাল বিক্রি ও বিদেশ থেকে আমদানিসহ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। তারপরও দাম বাড়ছে। ডাল, চিনির েেত্রও একই অবস্থা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছে বিশ্ব মন্দার প্রভাবে চলতি বছরও কৃষি ও জ্বালানি খাত অস্থির থাকতে পারে। ফোরাম তাদের ‘গ্লোবাল রিস্ক ২০১০’ এর প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্ব মন্দার প্রভাব সবচেয়ে বেশী পড়েছে কৃষি ও জ্বালানি খাতে। চলতি বছরও এ খাতগুলোতে স্থিতাবস্থা ধরে রাখা কঠিন হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাও ( এফএও) পূর্বাভাস দিয়েছে। চাল ও চিনির মতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে এবং তা ২০০৮ সালের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। আর্ন্তজাতিক বাজারে পণ্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়ার আশংকা রয়েছে। এতে করে আমদানি খরচও বাড়বে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এখনো মূল্যস্ফীতি আশংকাজনক পর্যায়ে রয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অক্টোবর ০৯ সময়ে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছিল ৬ দশমিক ৭১ শতাংশে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। কারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে তা সামষ্টিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। সাধারণত আন্তর্জাতিক বাজারে জানুয়ারী- ফেব্র“য়ারীতে খাদ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি উল্টো। গত দু’মাসে কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোতেই খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত জানুয়ারীতে ভারতে বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮১ ভাগ। চীনে বেড়েছে ১৩ ভাগ। আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদার অধিকাংশই আমদানি করে থাকে চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। ইতোমধ্যে এই দেশগুলোতে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ভারত ইতিমধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। প্রভাব পড়ছে দেশে বর্তমানে দেশে চালের কোন সংকট না থাকলেও দাম বাড়ছে। বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম। তাই চলতি উৎপাদন মৌসুমের মজুদ মূল্যায়ন না করলে আবারও খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে এবং দাম বৃদ্ধি প্রবণতা লাগামহীন হতে পারে। নতুন করে সুযোগ নিতে পারে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। জিনিসপত্রের দাম সহনীয় রাখা এবং উচ্চ টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ল্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সহযোগী মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। অপরদিকে ভারতীয় বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আরো উদ্বেগ জনক। গত ডিসেম্বর মাসে দেশে শিল্প বৃদ্ধির হার বেডে যাওয়ায় দেশবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে ভাবছেন, দেশীয় অর্থনীতিতে দুঃখের দিন ঘুচল। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি দেশজোড়া সমীা ‘ইন্ডিয়ান ইকনমিক আউটলুক’ জানাচ্ছে, এত আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই, বিশ্ব বাণিজ্যের মন্দা কাটার প্রচার আসলে ভাঁওতা। যে কোনো সময়েই দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসতে পারে সেই মন্দা। আর তাতে ভারতও একটা বড় ধাক্কা খাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর মাসে দেশে শিল্প বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৬.৮ শতাংশ। আর এই সাফল্যের বেশির ভাগটাই জুড়ে আছে উৎপাদন শিল্প। চলতি আর্থিক বছরের পর পর তিনটি ত্রৈমাসিকে মোটের উপর শিল্পের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশের কাছাকাছি। সব মিলিয়ে গত এক বছরের নিরিখে দেশের সর্বত্রই আর্থিক ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ স্পষ্ট। কিন্তু গোল বেধেছে অন্য জায়গায়। দেশের আর্থিক বৃদ্ধি নির্ভর করে কৃষির উপরেও। আর এবার তাতেই ডাহা ফেল আমাদের দেশ। সবাইকে চিন্তায় রেখে দেশে কৃষির উৎপাদন শূন্যেরও নীচে নেমে গিয়েছে। লাফিয়ে বেড়েছে খাদ্যদ্রব্যের দাম, চড়েছে মুদ্রাস্ফীতির পারদও। কৃষির উৎপাদন কম, তাই কৃষকের হাতে টাকাও কম। গ্রামীণ অর্থনীতিও সংকটের মুখে। বাস্তবের এমন এক কঠিন সময়ের মধ্যেই আরেকটি দুশ্চিন্তা নতুন করে ভাঁজ ফেলেছে ওয়াকিবহাল মহলে। তা হলো, দেশের সব শিল্প গুলোও অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। প্রায় সব শিল্পের সঙ্গেই এদের যোগ থাকায়, শিল্পজাত দ্রব্যের দাম বাড়ার আশংকায় ভুগছেন অনেকেই। ফলে একটা বিষয় স্পষ্ট, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ভালো হলেও, বাস্তব অবস্থা কিন্তু ততটা ভালো নয়। কর্পোরেট সংস্থার সর্বময় কর্তা, ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মতো ২৫০ পদাধিকারীর বক্তব্যের উপর তৈরি হওয়া এই সমীাটি জানাচ্ছে, ১৮৫ জন বলছেন, আমেরিকা ও ইউরোপের মতো উচ্চবিত্ত দেশগুলির মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো আসলে সত্যি কথা নয়। যেকোনো সময়ে দ্বিগুণ আকারে এই মন্দা ফিরে আসতে পারে। তাদের এই মনোভাবের মূল সূত্র হল, আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে আমেরিকা যে পরিমাণ আর্থিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করেছিল, শেষে তা ১.৩ শতাংশ কম হয়েছে। যে দেশের বার্ষিক আর্থিক বৃদ্ধি ৫.৬২ শতাংশ আশা করা হচ্ছে, সেখানে এই হিসাবটি অত্যন্ত হতাশাজনক। অন্যদিকে জাপানের মতো ধনী দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গণনায় আগের থেকে এখনকার ফারাক ৩.৬ শতাংশ। এই দেশ গত বছরের গভীর আর্থিক মন্দা কাটিয়ে সবে ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধির আশায় বুক বাঁধছে। সেইখানে এই হিসাবও অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। ভারতের শিল্প বৃদ্ধি মানেই বেশি রপ্তানি। এমন অবস্থায় সারা পৃথিবীতে আর্থিক ধস নামলে ভারতও তার হাত থেকে রেহাই পাবে না। এছাড়া পাকিস্তানে ও ভয়াবহ বন্যায় খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দুর্গত মানুষের জীবন। জাতিসংঘের এক ত্রাণ সংস্থা সম্প্রতি এ কথা জানায়। এ পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট’র জন্য এক নতুন সঙ্কট তৈরি করেছে। কারণ দেশটিতে বেসামরিক সরকারের দুর্যোগ মোকাবেলার অতীত ইতিহাস হতাশাজনক। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওএফপি) মুখপাত্র আমজাদ জামিল জানিয়েছেন, সংস্থাটির কর্মীরা খাদ্য সরবরাহ হতে বিচ্ছিন্ন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকায় জরুরিভিত্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বন্যায় ৩০ লাখ মানুষ তিগ্রস্ত হয়েছে বলে জাতিসংঘের একটি সাহায্য সংস্থা ইতিপূর্বে জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে তালেবান জঙ্গিদের যুদ্ধের কারণে বন্যা আঘাত হানার আগেই পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষ তাদের বসতবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। সেখানকার মানুষের খাদ্য মজুদ শেষ হয়ে গেছে। বাজারগুলো খোলা নেই, দোকান-পাট ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ চরম খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে। এদিকে নেপালেও চরম খাদ্য সঙ্কট চলছে। শিগগিরই সেখানে খাদ্য সরবরাহ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। নেপালের পল্লী অঞ্চলের গ্রামবাসীদেরকে খাবার জোগাড়ের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে প্রতিদিন। দেড়দিন পায়ে হেঁটে খাদ্য সরবরাহের জায়গাগুলোতে পৌঁছে খাবার সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদেরকে। প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাবে আর্ন্তজাতিক ত্রাণ সরবরাহ গত মাসে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, দাতারা তহবিলের ব্যবস্থা করলে তারা আবার খাদ্য সরবরাহ শুরু করবে। বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধি রিচার্ড রগন বলেছেন, হাইতির ভূমিকম্পের মতো কোনো বিপর্যয়ের কারণে নেপালে এ সঙ্কট তৈরি হয়নি। বরং ২০-৩০ বছর ধরে দাতারা এবং নেপাল সরকার খাবারের অপ্রতুলতা এবং খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা তুলে না ধরায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নেপালে ১০ বছরের অভ্যন্তরীণ সংঘাত। সংঘাতের কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। অপরদিকে পশ্চিম আফ্রিকায় খাধ্য সংকট মোকাবিলায় ত্রাণ সংস্থাগুলো ১ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ডের (২ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ১ কোটি ৭০ লাখ ইউরো) আবেদন জানিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, তা না হলে এক অভাবনীয় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অক্সফাম এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, ঐ অঞ্চলে দীর্ঘ খরায় ফলহানির দরুন ১ কোটিরও বেশি লোক গুরুতর খাদ্য সংকট ও অপুষ্টিতে ভুগছে। ত্রাণ সংস্থা দু’টি পরিস্থিতি সামলাতে প্রত্যেককে ৭০ লাখ পাউন্ড করে চেয়েছে। অক্সফাম ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে, নাইজারের খাদ্য পরিস্থিতি সবচাইতে শোচনীয়। দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি ৭০ লাখ লোক মারাত্মক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। সংস্থাটি বলেছে, নাইজেরিয়ারী বেশির ভাগ অঞ্চল খাদ্য সংকটের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, দীর্ঘ খরায় নাইজারে পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, নাইজার ও শাদের মানুষ পশুর মত জীবন কাটাচ্ছে। মেয়েদের অবস্থা আরো শোচনীয়। পশ্চিম আফ্রিকায় কর্মরত অক্সফামের আঞ্চলিক প্রধান মাসুদ বিটে বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঐ অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় এড়ানো যাবে না। ফসল ওঠার মওসুম আসতে আরো সময় লাগবে। মানুষ সেখানে খাদ্য-কুখাদ্য খাচ্ছে, পান করছে বহুকষ্টে জোগাড় করা নোংরা পানি। অর্থ সংগ্রহ করতে না পারলে বহু লোককে বাঁচানো যাবে না। এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তাদের এখনই খাদ্য তিতে না পারলে গুরুতর পরিস্থিরি সৃষ্টি হবে। তবে আমাদেও দেশে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের আমদানি করে মজুদ বাড়াতে হবে। এ জন্য টিসিবিকে কার্যকর করতে হবে। ঢেলে সাজাতে হবে এই প্রতিষ্ঠানকে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। এছাড়া বাজারকে সবসময় তদারকির মধ্যে রাখতে হবে। আমাদের মতে, সরকার যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে তা বিনিয়োগবান্ধব। এটা কাজে লাগাতে হবে। দেশে যেন বিনিয়োগ বাড়ে তার উদ্যোগ নিতে হবে। যখন সংকট তখন উদ্যোগ না নিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা মতো কাজ করে সংকট মোকাবেলা করতে হবে। দু:খজনক হলেও সত্য যে, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চলতি আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান চাল ক্রয় অভিযান উত্তরাঞ্চলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মধ্যে ১৪ জেলার খাদ্য গুদামে এক ছটাক ধানও কেনা হয়নি। ১৬ জেলায় এবার ধান কেনার ল্যমাত্রা ৫৪ হাজার ২৮৬ টন ধরা হলেও কেনা হয়েছে মাত্র দেড় টন। একই ভাবে এক লাখ ২৬ হাজার ১৯৭ টন চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা থাকলেও তার বিপরীতে কেনা হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৬৫৫ টন। কারন, বাজার দরের চেয়ে সরকারি মূল্য অনেক কম হওয়ায় কৃষকরা এবার গুদামে ধান বিক্রি করেনি। রাজশাহী বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ জানায়, এবার রাজশাহী জেলায় ২ হাজার ৫৭৫ টন ধান কেনার ল্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৪২০ টন। একইভাবে রংপুরে ৪ হাজার ৫৭৯ টনের বিপরীতে অর্জিত হয়েছে এক দশমিক ৫ টন। বিভাগের এই দুই জেলা ছাড়া আর কোন জেলায় ধান সংগ্রহ হয়নি। এদিকে রাজশাহী বিভাগে সরকারি পর্যায়ে চাল সংগ্রহের কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের তথ্য মতে বিভাগের ১৬ জেলায় চাল সংগ্রহে এক হাজার ৮ ৬১টি মিলের সাথে চুক্তি হলেও মিলাররা এখনো চাল পুরোপুরি গুদামে দেয়নি। আশাকরি সরকার খাদ্য মওজুদ ও নিত্যপণ্য আমদানির ব্যাপারে সর্তক ভূমিকা গ্রহণ করবেন।
†jLK: W.†dviKvb Avjx
M‡elK I mv‡eK Aa¨¶
36 MMbevey †ivo,Lyjbv
01711579267
Email- dr.fourkanali@gmail.com
0 comments:
Post a Comment